Your slogan here
Welcome
Here you can
enter your
own text


যুধিষ্ঠিরের সহিত শকুনির দ্যূতক্রীড়া ও শকুনির জয়ঃ পরদিন প্রভাতে পাণ্ডুর পাঁচ পুত্র আনন্দিত মনে নব নির্মিত সভায় প্রবেশ করলেন। একে একে সকলের সাথে কুশল সম্ভাষণ করে তারা কনক সিংহাসনে বসলেন। শকুনি তখন তার পাশা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হল। শকুনি বলে – হে ধর্ম নৃপমণি মহারাজ যুধিষ্ঠির পুরুষদের মনোরম দ্যূতক্রীড়ার সূচনা করুন। যুধিষ্ঠির বলেন –পাশা খেলা সব অনর্থের মূল। এ খেলার মাধ্যমে ক্ষত্রিয়ের পরাক্রম প্রদর্শন হয়না। এ খেলায় কপটতা আছে। এই অনীতি ক্রীড়ায় আমার মনের সায় নেই। শকুনি বলে –রাজা, পাশা খেলায় বুদ্ধির প্রয়োজন হয়। ক্ষত্রিয়ের ধর্ম পাশা খেলা অথবা যুদ্ধ করা। যুদ্ধে জাতি অজাতির বিচার চলে না। সেখানে হীন জাতীর প্রহারও সইতে হয়। কিন্তু পাশা সম মন ও সম বুদ্ধির সমর। মুনিরাও বলেন ক্ষত্রিয়েরা পাশা খেলতে পারে। যুধিষ্ঠির বলেন –পাশা শঠতার খেলা। মামা আপনি অধর্ম করে আমায় জেতার চেষ্টা করবেন না। শকুনি বলে –রাজন এত ভয়! তবে আপনি নিজ স্থানে ফিরে যান। পণ্ডিতে পণ্ডিতেই এ ক্রীড়া সম্ভব। আপনার যদি দ্যূতক্রীড়ায় মন না চায় তবে এখনই গৃহে ফিরে যান। যুধিষ্ঠির বলেন –আমায় যখন ডেকে পাঠিয়েছেন, তখন আমি খেলব। সত্যের পথ থেকে সরে যাব না। এ সভায় কার সাথে আমার খেলা! পণ কে দেবে! মেরুতুল্য সম্পদ আমার, চার সমুদ্রের সমান রত্ন আমার ভান্ডারে। দুর্যোধন বলে –আমার হয়ে মাতুল শকুনি খেলবেন। মামা যত রত্ন হারবে সব আমি দেব। এভাবে সভার মাঝে শকুনি ও যুধিষ্ঠির পাশা খেলতে বসল। মনে অসন্তোষ নিয়ে ধৃতরাষ্ট্র, ভীষ্ম, দ্রোণ, কৃপাচার্য এবং বিদুর ও অন্যান্য সভাসদরা ক্রীড়া দেখতে লাগল। ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির বলেন –আমি পণ রাখছি আমার ইন্দ্রপ্রস্থের সকল রত্নের ভান্ডার। হে দুর্যোধন সে পরিমান ধন কি তোমার আছে! কোথা থেকে সে পণ তুমি দেবে! দুর্যোধন বলে –আমারো অনেক সম্পদ আছে। আমাদের জিতলে অবশ্যই সব আমি তোমায় সমর্পণ করব। সারি নির্ণয় করে শকুনি তখন পাশা ফেলল এবং এক কটাক্ষে সব রত্ন জিতে নিল। ক্রোধে যুধিষ্ঠির পুনরায় পণ করলেন – আমার কোটি কোটি সব মহা বলশালী অশ্ব বাজি রাখছি। শকুনিও সাথে সাথে হেসে পাশা ফেলে বলে –এই সব জিতে নিলাম। এবার কি পণ করতে চান! যুধিষ্ঠির বলেন –আমার অগণিত রথ আছে, সে সব নানা রত্নে বিভূষিত। মেঘের মত তাদের গর্জন। তাই পণ রাখছি। শকুনি হেসে পাশা ফেলে বলে – দেখুন সে সবও জিতে নিলাম। এবার অন্য পণ রাখুন। ধর্মরাজ বলেন –আমার ইষদন্ত মহাকায় দুর্নিবার হস্তিবৃন্দ পণ রাখছি। এবারও শকুনি বলে ওঠে –জয় করলাম। যুধিষ্ঠির বলেন – নানা রত্নে সজ্জিতা সহস্র সুন্দরী দাসী আছে, যারা ব্রাহ্মণের সেবায় ব্রত, তাদের পণ দিচ্ছি। শকুনি পাশা ফেলে হেসে ওঠে –ওহে এবার আর কিছু পণ রাখ। তারাও আমার হল। ধর্মপুত্র বলেন –আমার অগণন গন্ধর্ব অশ্ব আছে, যাদের সাথে সারা ভুবন ভ্রমণ করলেও এতকুটু কষ্ট হয় না। চিত্ররথ গন্ধর্ব আমায় উপহার দেন। এবার তাদের পণ রাখছি। হেসে সুবলপুত্র শকুনি বলে –অশ্ব সব জিতে নিলাম। যুধিষ্ঠির বলেন –আমার যত দুর্ধর্ষ যোদ্ধা সৈনিক আছে তাদের পণ দিচ্ছি। গান্ধার নন্দন শকুনি সামান্য হেসে সে সবও জয় করল। এভাবে কপট শকুনি একে একে সব জয় করতে থাকে। অন্যদিকে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির সব ধন একে একে হারাতে লাগলেন। ................................................ ধৃতরাষ্ট্রের প্রতি বিদুরের উক্তিঃ সব দেখে শুনে বিদুর ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। বিদুর রাজা ধৃতরাষ্ট্রকে বলেন –হে রাজন, আমার কথা আপনার একটুও মন নেয় না! মৃত্যুকালে যেমন রূগী ওসুধ খেতে চায় না। হে অন্ধরাজা আপনি এখনও স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন! জন্মমাত্র যখন আপনার এই পুত্র খর(গর্দভ)শব্দ করেছিল তখনই আমি বলেছিলাম কুরুকুলের ক্ষয় করতে এর জন্ম। একে ত্যাগ করুন। আমার কথা শুনলেন না। এখন তার ফল সে দেখাচ্ছে। সংহার রূপে এ আপনার ঘরে আছে। স্নেহে অন্ধ হয়ে এর দোষ আপনি দেখতে পান না। দেব গুরু নীতি রাজা আমি আপনাকে বলি। মধুর কারণে মধুলোভীরা বৃক্ষোপরে ওঠে। মধুর নেশায় তারা পতনের ভয় ভুলে যায়। আপনার এ পুত্র দুর্যোধনও সেরূপ আজ মত্ত। এভাবে মহারথীদের সাথে শত্রুতা করছে। আজ আমার কথা না শোনার ফল পরে আপনি বুঝবেন। এর মত কংসভোজ জন্মেছিল। সে দুষ্টও মত্ত হয়ে পিতার বংশ নাশ করেছে। সকলে তাকে ত্যাগ করে। শেষে গোবিন্দের হাতে তার সংহার হয়। হে রাজন, গোবিন্দের সাথে সখ্যতা রাখলে সপ্তবংশ সুখে থাকবেন। আমার বাক্য শুনুন মহারাজ! এখনই পার্থ অর্জুনকে আজ্ঞা দিন, সে দুর্যোধনকে পরাজিত করে বন্দি করুক। তারপর নির্ভয়ে পরম সুখে রাজকার্য করুন। এভাবে কাকের হাতে ময়ূরের অপমান হতে দেবেন না। এতো শিবার(শেয়াল) হাতে সিংহের অপমান। এভাবে শোক সিন্ধুর মাঝে নিজের পতন ঘটাবেন না। যে পক্ষী অমূল্য রত্ন প্রসব করে মাংস লোভে বিজ্ঞজনরা কখনই তাকে খায় না। রাজা, সোনার বৃক্ষ যত্ন করে রোপণ করে রক্ষা করলে পরে দিনে দিনে সুন্দর পুষ্প পেতেন। হে নরপতি যা হয়ে চলেছে এখনই তা বন্ধ করুন। নিজ পুত্রদের কেন যমের অতিথি করছেন! এই পঞ্চপাণ্ডবের সাথে কার যুদ্ধ করার ক্ষমতা আছে শুনি! পাণ্ডবদের আজ যে শক্তি, যে ক্ষমতা – দিক্‌পাল সহ বজ্রপাণি ইন্দ্র এলেও পরাজিত হবেন। হে ভীষ্ম, হে দ্রোণ, হে কৃপ-কেউ তো আমার কথা শুনুন! সবাই মিলে নত মস্তকে এই অন্যায় হতে দেখে যাচ্ছেন! হে বীর, এভাবে অগাধ সমুদ্রে অবহেলায় নৌকা ডোবাবেন না। এভাবে তো সবাই মিলে দেখছি যম গৃহে যেতে চলেছেন। অক্রোধী, অজাতশত্রু আমাদের এই যুধিষ্ঠির রাজন। কিন্তু যখন ভীম ও ধনঞ্জয় অর্জুন ক্রুদ্ধ হবে, সেই যুগল যখন ক্রোধে সংহার শুরু করবে তখন কে প্রবোধ দেবে তাদের! হে অন্ধরাজা, পাশার ছলনায় সব নেবার কি ছিল। আজ্ঞামাত্র তো ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির সব আপনাকে নিবেদন করত। এই শকুনিকে আমি ভাল মত চিনি। কপট, কুবুদ্ধি, খলচূড়ামণি। কোথায় পর্বতপুরে এর নিবাস, কিন্তু সর্বনাশ করতে এখানে পরে আছে। একে এক্ষুনি বিদায় করুন, নিজ গৃহে ফিরে যাক। হে শকুনি উঠে এস, পাশা ত্যাগ কর। বিদুরের এত কথা শুনে দুর্যোধন ক্রোধিত হল, যেন আগুনে ঘৃত ঢালা হল। দুর্যোধন গর্জন করে বলে –আমরা তোমার কথা শুনব না। কার হয়ে তুমি এত কথা সভা মাঝে বলছ! তুমি সর্বদা পিতা ধৃতরাষ্ট্রের হানি চেয়েছ। সবাই যানে পান্ডুর ছেলেরা তোমার অতি প্রিয়। আমি আমার ধারে কাছে শত্রুহিতকারীদের রাখতে চাই না। তুমি এই সভা থেকে উঠে যেখানে খুশি যেতে পার। এখানে থাকার যোগ্য তুমি নও। কুজনকে যত্ন করে রাখলেও সে অসৎ পথে গমন করবেই। সভার মাঝে তুমি যে সব কথা বললে অন্য কেউ হলে আজ তার প্রাণের আশা থাকত না। আমি তোমায় যত সম্মান করি, তুমি ততই আমায় আনাদর কর, জ্ঞানহীন ভাব। সভা মাঝে এমনভাবে কথা বলছ যেন তুমি এখানকার প্রভু! কেউ তোমার মত এমন কদর্য আচরণ করবে না। বিদুর বলেন –আমি তোমায় কিছু বলছি না। হে ধৃতরাষ্ট্র আপনার দুঃখ দেখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে। দুর্যোধন তোমায় আর কি বলব। ধৃতরাষ্ট্র আমার কোন কথাই শুনলেন না। হতায়ু(আয়ু যার শেষ) জন কখনও হিতের কথা শোনে না। তুমি আমায় কি কথা বলতে আসছ! নিজের সমকক্ষ কাউকে এসব কথা বল। এত বলে ক্ষত্তা বিদুর চুপ করে গেলেন। আমার ছোট কাকা বিয়ে হয়েছিল কুড়ি বছর আগে, তখন খুবই ছোট্ট ছিলুম । লালটুকটুকে কাকীমা ছিল আমাদের , কাকে তাকে খুবই আদর করতো । বড়দের আদর তো তখন বুঝতাম না , বড়রা বুঝতো শুধু দেখতাম কাকা-কাকীমাকে নিয়ে সময়-অসময় ঘরের দরজাবন্ধ করে রেখেছে । আমাদের ক্রিকেটের ব্যাট কাকার ঘরে রাখতুম , কাকার দরজায় ডাকা-ডাকি করলেও সে দরজা খুলতো না খবুই বিরক্ত হয়েছিলাম প্রথম দিগে । মা একদিন এ দেখে , কানডলে বললো: ওদের ডিস্টাব করিস ক্যান? আমি চোখ বড় বড় করে ভাবছিলুম এ কেমন কথা ? কাকাকে তো এভাবেই দরজা থাপড়িয়ে ডেকে তুলি !! এক দুপুরে কাকীমা আমাকে ভাত মেখে খাওয়াচ্ছিলো , উপস্থিত সবার মধ্যই বলে ফেললাম, কাকীমা দিনের বেলা তোমরা দরজা দিয়ে এত কি করো গো ? সারাদিন রাত ঘুমাও তোমরা ? নুতন কাকী লজ্বায় মুখ ডাকলো , এরপর থেকে দিনদুপুরে তাদের দরজায় খিল দেয়া কমে গিয়েছিল । বছর পর কাকীমার মেয়ে সন্তান হলো , ছোট্ট হাত,পা,নুক,মাথা,চুল,আঙুল নিয়ে ও জন্মালো , আমি সারাদিন তখন ঐ ছোট্ট মানুষটির পাশেই বসে থাকতুম , ছোট্ট শরীর কিন্তু অদ্ভূত ঘ্রাণ ছিল ওর শরীরে, ছোটরা বুঝি এক মায়াকরা ঘ্রাণ নিয়ে জন্মায় । ওর ক্ষুদাপেলে কাকীমার শাড়ীর ভেতর দিয়ে ওকে স্তন দিত , বা কখনো মুক্ত হয়েই পুড়ে দিত । আমি তখন ভাবতুম আমার ছোট্টবোনটি কি মজা করেই না খাচ্ছে, খুব মিষ্টিবুঝি মায়ের স্তনের দুধে । একদিন কাকীমাকে বললুম, তোমার মেয়েকে তো রোজ দুধ খাওয়াও , আমাকে একটু দাওনা ? কাকীমা খুব মিষ্টিবুঝি দুধে ? কাকীমা হেসেই খুন , পর কাকীমা দিল খেতে , কেমন জানি তেতুছিল ! মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলছিলাম এ ও খায় কি করে ? কাকীমা বললো , ও তো খুব ছোট্ট তাই পাড়ে , আমি বলছিলাম আমিওতো ছোট্ট ? কাকীমা, হ্যাঁ ওর থেকে তুই বড় তাই না ? তাই হবে হয়তো । বছর দু'য়েক পর ছোট্ট কাকারা স্থির করলো , তার শশুরের বাড়ির পাশে জেলাশহরের চলে যাবে ,সব জমি জমা বিক্রি করে । বাবা কাকাকে কত বুঝালো সে শুনলো না, আমি কাকীমাকে কত কেদেঁ বললাম সেও শুনলো না , অবশেষে চলে গেল তারা । বছর তিনেক পর একবার গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে কাকাদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, অনেকদিন পর দেখা হয়ে ভালো লাগবে ভেবেছিলাম । কিন্ত সবাই কেমন জানি বদলে গেল, রুক্ষ হয়ে গেল, কাকীমার চেহারায় মিষ্টি চেহারার পরিবর্তে কঠিন-নিষ্টুর এক ছাপ যেন , তার ছোট্ট মেয়ে অনিলাও দেখি আমার পাশে আসে না । যদিও কাকা আমার সাথে দু' একটি কথা বলে অন্যরা তাও না । ওমন পরিবেশে বেশিদিন আর থাকতে পারিনি , তাদের বাসা থেকে বের হয়ে যেন মুক্ত হলাম । মানুষ কেন বদলে যায়, নিষ্টুর হয় ,রুক্ষ ব্যবহার করে ? মানুষ কেন সাধারণ থাকে না ? এরপর অনেকদিন কেটে গেল, ওরা কেউ কোনদিন আমাদের বাসায় আসেনি আর । বাবা-মা অনেক রিকুয়েষ্ট করেছিল অনিলাকে আনার জন্য, বাব-দাদার ভিটে কখনো ও তো আসেনি । গত বছর অনিলার বিয়ের দাওয়াত পেলাম , এবং গেলাম সেই ছোট্ট হাত,পা,আঙুলে হাত বুলানো অনিলা কত বড় হয়েছে, মুখে দিপ্তী হাসি, শরীরে যৌনের ছুয়া । কাকা আমাকে ডেকে নিয়ে ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, ও মানুষ তোমার দাদা হয় । বুঝলাম আমাদের নিয়ে কোনদিন আগে গল্প বুঝি শুনেনি ও, তাই অনুপ্রেরনাও কম শুধু সাধারণ সৌজন্যবোধ দিয়েই কিছুক্ষন কথা,বার্তা । কাকীমা মধ্যবয়স্কা শরীরটা মফস্বলের ছায়াতেই সুন্দর করে টিকিয়ে রেখেছে যেন , বয়সের ছাপ বুঝা যায় না । আমাকে দেখে বললো, ও বাবা কে এসেছে গো ? কিছুক্ষন আন্তরিকতা দেখিয়ে নিভে গেল যেন । পর কত কত মানুষ এলো , কাউকেউ তো চিনি না । শুধু অপরিচিত মানুষের ভেতর বসে রইলেম । আমিও যেন , অপরিচিত কারো বাসায় নিমন্ত্রন গ্রহন করে এলাম । ধীরে ধীরে অনুষ্টান শেষের পথে মানুষ কমে এলো , আমিও চলে এলাম । কিন্তু এমন হতে পারতো , মানুষ তোমার বোনের বিয়ে এখনি চলে যাবে মানে ? অনিলা বলতো, তুমি যদি চলে যাও তোমার সাথে আমার কাটাকুটি । বাসে জানালার পাশে বসে বসে এই নিয়ে ভাবছিলাম, আমরা সম্ভবত সবাই অপরিচিত ।ভ্যাট আইন-২০১২ বলবৎ দুই বছরের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্তের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। এ আইন বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আইনটি চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যেসব যুক্তির সঙ্গে একমত হয়েছেন, পরে দেখেছি সভার কার্যবিরণীতে তার স্থান হয়নি। এ কারণে আমাদের মনে হয়েছে, রাজস্ব বোর্ড যেনতেন প্রকারে আইনটি কার্যকর করতে চায়। আমরা আলোচনার সময় সবার জন্য ১৫ শতাংশ নয়, বরং বিভিন্ন হার চালুর কথা বলেছি। যেমন, দামি সিগারেট কিংবা মদ ও মাদক জাতীয় পণ্য। এর হার ১৫ শতাংশ না হয়ে ২৫ শতাংশ হলে ক্ষতি কী? বাংলাদেশে ২০০ টাকায় এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট পাওয়া যায়। অনেক দেশে এর দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। তাদের সুবিধার জন্যই কি এ আইন? সোনারগাঁও বা র‌্যাডিসন হোটেলে খেতে হলে যে হারে ভ্যাট দিতে হবে; সাধারণ মানের হোটেলেও কেন একই হার হবে? এতদিন আমরা রডের জন্য টনপ্রতি ৮০০ টাকা কর দিয়েছি। নতুন আইনে এর পরিমাণ দাঁড়াত ৯ হাজার টাকা। স্বর্ণালঙ্কারের জন্য কর ছিল ৪ শতাংশ। নতুন আইনে প্রতি ভরির জন্য অতিরিক্ত দিতে হতো ৯ হাজার টাকা। এ আইন যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করত, তা সরকার কীভাবে সামাল দিত? বিদ্যমান আইনে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম ভ্যাট পরিশোধ করে থাকেন। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এ অর্থ আদায়ের তাগিদ থাকত। নতুন আইনে ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে ৪৫ দিনের মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে হিসাব চূড়ান্ত করে তা পরিশোধ করার কথা। এতে বহুজাতিক কোম্পানি ও বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা। কিন্তু সমস্যা ছোট ও মাঝারি হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানের। এভাবে রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশে এমন সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি যে, স্বেচ্ছায় সততার সঙ্গে সরকারের ভাণ্ডারে ভ্যাট ও অন্যান্য কর পরিশোধ করা হবে। সরকারেরও সমস্যা আছে। আমার কাছ থেকে যদি রাজস্ব বোর্ড কোনো কারণে ১০০ টাকা বেশি কর আদায় করে, তাহলে বছর শেষে চেকের মাধ্যমে সে অর্থ বাসায় পেঁৗছে দেওয়ার কথা। বাস্তবে এ অর্থ ফেরত পাওয়া যে কত কঠিন, তার ভুক্তভোগী লাখ লাখ মানুষ। ভ্যাট আইন অনেক বড়, কিন্তু বিধিমালা ছোট। ব্যবসায়ীদের সমস্যা দেখা দিলে অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান পাওয়া যায়। কোনোটির তাৎক্ষণিক সমাধান মেলে। কখনও বা আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশ কেবল স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি অতিক্রম করছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বেশিরভাগ প্রথম প্রজন্মের। আমাদের অনেক সমস্যার জন্য পদে পদে সরকারের দ্বারস্থ হতে হয়। অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান মেলে। কিন্তু ভ্যাট আইন-২০১২ বলবৎ হলে ছোটখাটো সমস্যারও সমাধান পাওয়া কঠিন হতো- এমনই মত বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার। এ আইনকে বলা হয়েছে, আধুুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। আইন বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ ছিল। রাজস্ব বোর্ড প্রচার করছে, তারা ২ লাখ লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রশিক্ষণ দিলে তো আমাদের জানার কথা। বাস্তবে ২০০ লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কি-না সন্দেহ। যে কোনো যুদ্ধে যেতে অস্ত্র প্রয়োজন। ভ্যাট আইন বলবৎ করতে হলে প্রয়োজন লাখ লাখ ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার। এ মেশিন সরবরাহের কথা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের। তারা কতটা মেশিন আমদানি করেছে? ১ জুলাই তারা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু কোথাও কি নতুন করে এ মেশিন তারা সরবরাহ করেছে? এখন যদি কেউ বলেন, অর্থনীতিতে যে অগ্রগতির ধারা তাতে বিঘ্ন সৃষ্টির একটি প্রচ্ছন্ন অপচেষ্টা ছিল, সেটা কি অস্বীকার করা যাবে? নতুন আইনে বিভিন্ন পর্যায়ে রেয়াতের সুবিধার কথা বলা হয়েছে। আমাদের দেশে হাজার হাজার উদ্যোক্তা স্থানীয় বাজার থেকে কাঁচামাল ক্রয় করে পণ্য উৎপাদন করে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে এ রেয়াত নেওয়ার সুযোগ কতটা? এ সুবিধা স্পষ্ট না হওয়ায় বিপুল সংখ্যক পণ্যের দাম বাজারে বেড়ে যেত। এখন ব্যবসা প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ। দেশের বাজারেই আমরা বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি। ভ্যাট আইন চালু হলে এ প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যেত। আমরা বারবার দেশীয় শিল্পের জন্য সুরক্ষা চেয়েছি। অন্যদিকে সরকারের ভেতর থেকে কেউ কেউ বলেন, আর কতকাল সুরক্ষা দেওয়া হবে? অথচ আমাদের পাশেই দুটি বড় অর্থনীতির দেশ চীন ও ভারত। তারা কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সংরক্ষণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা পণ্যের সঙ্গে আমাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রতিযোগিতা হয় বাংলাদেশেই। টিকে থাকা যে কত কঠিন, সেটা প্রতি মুহূর্তে উপলব্ধি করি আমরা। ভালোভাবে প্রস্তুতি না নিয়ে ভ্যাট আইন চালু হলে অর্থনীতির তেজিভাব বজায় রাখা কঠিন হতো- সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। এতে ভোক্তাদের সমস্যা বাড়ত, রাজস্ব আদায় কমে যেত। প্রধানমন্ত্রী এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেছেন। মানুষের মধ্যে কম জনেরই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় থাকে, যা দিয়ে জটিল ও দুরূহ সমস্যার সমাধান করা যায়। তিনি এটা করতে পেরেছেন। তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়ে অর্থনীতিকে বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়েছেন। সুত্রসতর্কীকরণ :টি একটি অনুগল্প,গল্পটি পড়লে হয়ত আপনার অস্বাভাবিক লাগতে পারে,হয়ত মনে ক্রোধ জন্ম নিতে পারে,হয়ত অসুস্হ বোধ করতে পারেন।আমাকে গালাগালি করতেও পারেন! এটা নিছকই একটা গল্প হিসেবে নিন।জীবনের সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ী নয়..... আপন। পেজ নাম্বার :২৩৭, ডেট:১১-০৩-২০১১ সময়:০৩৪৩এএম আবহাওয়া: জানি না কিছু কিছু সময়, কিছু কিছু ঘটনা আমাদের জীবনটাকে পুরোপুরি ওলটপালট করে দিয়ে যায়।কিছু বুঝেওঠার আগেই অনেক কিছু হয়ে যায়।যা পর্বর্তীতে সারা জীবন বোঝার মত বয়ে বেড়াতে হয়।এক পক্ষের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত। মানুষ একাকিত্ব পছন্দ করে।আমিও করি।যা খুশি তাই করা যায়,যা খুশি তাই ভাবা যায়।অফুরন্ত স্বাধীনতা।তবে অনেক সময়ের জন্য নয়।অনেক সময়ের একাকিত্ব অভিশাপ। একদিন কলেজে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া আবস্হায় মা ফোন দিয়ে জানালো আমার এক ফুপি অসুস্হ,বাসার সবাই (আব্বু,আম্মু,ছোট বোন) সবাই ফুপির বাসায় যাচ্ছে,বাসার চাবি পাশের বাসার সাহানা আন্টির কাছে দিয়ে যাচ্ছে।আমি যেন ক্লাশ শেষ করে দেরি না করে তাড়াতারি বাসায় চলে যাই। দুপুর বারোটার দিকে আমি বাসায় পৌছুলাম।শাহানা আন্টির বাসায় নক করলাম।কেউ দরজা খুলছে না।দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।মনে হচ্ছে বাসায় লোক আছে।আমি বাসার সামনে হাটাহাটি করছি আর এটা সেটা ভাবছি।সাহানা আন্টির একটি মেয়ে আছে এবার ক্লাশ নাইনে উঠেছে।গায়ের রঙ ফরসা, তার এই গায়ের ফরসা রঙটা আমাদের যুব সমাজের কাল হয়েছে।কাউকেই পাত্তা দেয় না। কিছুক্ষন অপেক্ষা করে আবারো দরজা নক করলাম।সোহানা আন্টি দরজা খুল্লেন। "ও,তুই...আয়,ভেতরে আয়... অনেক ইচ্ছা থাকার সত্বেও গেলাম না।আন্টি ভেতর থেকে চাবি নিয়ে এলেন।চাবি দিতে দিতে জানিয়ে দিলেন তিনি গোশলে ছিলেন তাই সময়মত দরজা খুলতে পারেন নাই। আমি চাবি নিয়ে বাসায় ঢুকলাম।কবরস্হানের মত নীরব।টিভি ছাড়লাম।গোশল করতে হবে। প্যাকেট থেকে একটি সিগরেট ধরিয়ে নিলাম।মাত্র দুটি সিগরেট আছে বাকি।অনেকটা সময় চলতে হবে।নিজ ঘরে সিগরেট টানার মজাই আলাদা। মাথার মধ্যে হালকা হালকা ঝিম ঝিম করছে।গোশল করলে কমতে পারে বলে মনে হচ্ছে। গোশল খাওয়া দাওয়া করে আম্মুর ঘরে শুয়েছি।বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি।হালকা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব।আমি কাথা টেনে নিলাম।টিভি চলছে।আমি ক্রমাগত চ্যানেল চেঞ্জ করে চলেছি।মাথার মধ্যে ঝিম ঝিম ভাব আছে।আমি টিভি বন্ধ করলাম।পাশ ফিরে শুলাম।একটু ঘুমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। ক্রমাগত বেল টিপছি কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না।আমি দরজার বাইরে দাড়িয়ে।খুব বিরক্ত।আবারো সুইচ চাপলাম,বাসার ভেতর থেকে ক্রিং ক্রিং আওয়াজ এলো আমি নিজ কানে শুনলাম।আবারো চাপ দিলাম সুইচে।আমি চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি বিছানায়।কলিং বেল বাজছে।নিশ্চয় কেউ এসেছে।আবিষ্কার করলাম আমি আম্মুর ঘরে।মনে পড়ল বাসার সবাই বাইরে।আমি একাই আছি।নিশ্চয় আব্বু আম্মু চলে এসেছে।ঘরে সিগরেটের সামান্য গন্ধ রয়ে গেছে।সামান্য চিন্তিত বোধ করলাম।দরজা খুলে দেখি আমার ছোট মামি।হাফ ছারলাম।দরজা খোলা রেখেই এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।মামি দরজা বন্ধ করে আমার পিছে পিছে এলেন। 'আপা কোথায়' নাই,কেউ নাই। কোথায় গেছে? জানি না,খুব ঘুম পাচ্ছে।আমি ঘুমালাম। ঘুমাবা মানে? এই শান্ত... এই?? মামী আমার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে,আর ঘুমও পাচ্ছে প্রচন্ড,আম্মুরা আসলে দরজা খুলে দিও,আল্লা হাফেজ বাই। ওহ,আচ্ছা।মাথা টিপে দিব? কষ্ট না হলে দাও। মামী আমার মাথার চুল টেনে দিচ্ছে।পৃথিবীর মধ্যে আমার প্রিয় কাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম। মামীএকটু কপালটা টিপে দাও না.... মামী কোন কথা না বলে কপালে হাত রাখল।আমার পুরো শরীরে শিহরন বয়ে গেল।নিমেষেই যেন মাথা ব্যাথা উধাও হয়ে গেল।মামী টিভি ছেড়েছে।স্লো মোশনে হিন্দি গান আমার কানে আসছে। মামী,লাইটের আলো চোখে লাগছে। মামী আমার মাথার কাছ থেকে উঠে গেল,লাইট বন্ধ করে আবার ফিরে মাথার কাছে বসল। "টিভি বন্ধ করে দিব?" না থাক,সমস্যা হচ্ছে না" "মাথা ব্যাথা কমেছে?" "নাহ,এখনও কমেনি" ডাহা একটা মিথ্যে বলে দিলাম।এই বয়সটাই মিথ্যের বয়স।এলোমেলো একটা সময়।কখন মনে কি আসে,কখন কি করতে ইচ্ছে করে কেউই আগে থেকে তা বুঝতে পারে না।মামী আমার কপালে হাত রাখলেন।আমি নিম্নঙ্গে শিহরন অনুভব করলাম।আমার মন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল।এক ভাগ ব্রেইনে পাপের অনুভূতি জাগলো এক ভাগ ক্রমাগত ভাবে বলতে থাকল' বাসায় কেউ নেই,রুম অন্ধকার,বাসায় কেউ নেই রুম অন্ধকার......'। কিছু কিছু সময় সত্য মিথ্যার কাছে পরাজিত হয় কিছু সময়ের জন্য,কিন্তু সত্য তো আর চাপা দিয়ে রাখা যায় না।আজ এই দুপুরে খালি বাসায় আমার ন্যায় অন্যায়ের কাছে আত্বসমর্পন করল।আমি আমার মাথা ছোটমামীর কোলে রাখলাম। আমি ছোট মামীর মুখ দেখতে পাচ্ছিনা।চোখ বন্ধ করে আছি।ছোট মামীর মনের খবরও জানি না।এটা জানা সম্ভব নয়।থট রিডিং ক্ষমতা মানুষের নেই।ইতর শ্রেণির দু একটা প্রানীর মাঝে সামান্য পরিমানে আছে।এই মুহুর্তে আমার থটরিডিং ক্ষমতা খুব প্রয়োজন ছিল। মানুষের থট রিডিং ক্ষমতা না থাকলেও আর একটি ক্ষমতা আছে।আমরা অন্যের চোখ দেখে অনেক কিছু বুঝতে পারি।আমিও পারি কিছু কিছু।কিন্তু এই মুহুর্তে মামীর চোখ দেখা সম্ভব নয়।এখন যদি মামীর চোখের দিকে তাকাই,তাহলে তা সরাসরি কাম প্রস্তাব হবে,এটা বোঝার জন্য পন্ডিত হবার প্রয়োজন নেই।মানুষের ডিএনএ তেই এই খবর আছে। আমি অপেক্ষা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করলাম।এখনও ছোট মামীর আচরনে কোন নেতিবাচকতার প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি না।আমার নিম্নাঙ্গে শিহরন বেড়েছে।ক্রমাগত শক্ত হয়ে চলেছে।আমার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি কিলবিল করে চলেছে।আমার নিশ্বাস ভারি হয়েছে।মাথাব্যাথা ঘুম কোনটাই নেই।পরিচিত একটা হিন্দি গানের সুর টিভি থেকে ভেসে আসছে।আমার মন শরীর পুরোপুরি তৈরী অনাগত কামাভাসে।পরিবেশ পুরোটাই অনুকুলে।শুধু বাধা সম্পর্ক।একটি কঠিন সম্পর্কের দেয়াল আমাকে আটকে রেখেছে।হয়ত ছোটমামীকেও।এ সম্পর্ক সব কিছুরই অনুমোদন দেয় শুধুমাত্র যৌনতা বাদে। এসময় ছোটমামী একটু নড়ে বসল।আমার মাথা সামান্য স্হান পরিবর্তন করল।এতে ছোটমামীর নিশ্বাস আমার মাথায় পড়ছে।মামী আমার কপালে হাত রাখল। "মামী,সমস্যা হচ্ছে? মাথা নামিয়ে ফেলব?" নিজের কন্ঠ শুনে নিজেই আবাক হলাম।আমার কন্ঠ এতোটা ভাড়ি কিভাবে হল?? "না,সমস্যা নেই,ঘুম আসছে না? মাথাব্যাথা কমেছে?" আমি জবাবে মাথা নারলাম।মামীর কন্ঠ স্বাভাবিক।মামীর স্বাভাবিক কন্ঠ আমার উত্তেজনা কিছুটা কমিয়ে দিল।আমার বিভক্ত নেতিবাচক মনকে দূর্বল করে ইতিবাচক মনটা শক্তিশালি হয়ে উঠল। মাত্র কিছু সময়ের জন্য।ছোট মামীর একএকটি নিশ্বাস আমার মাথা হয়ে পিঠ পর্যন্ত যেন কাঠফাটা গরমে এক অনবিল শান্তির ঠান্ডা হাওয়ার পরশ।খুব আস্তে আস্তে মাথাটা মামীর শরীরের দিকে এগিয়ে দিচ্ছি।অন্যায় কে প্রশ্রয়। আমার মাথা পুরোটা এলোমেলো।কোন কিছুই ঠিক ভাবে ভাবতে পারছি না।শুধু মনে হচ্ছে একটি বিপরীত লিঙ্গের নগ্ন শরীর, কিছুটা বন্য সময়,আদিম খেলা।এছারা আমার মাথায় কিছু নেই,কিচ্ছু না। কায়দা করে মামীর কোলে পাশ ফিরলাম,যেন কোন ভাবে মামীর পেটে আমার মাথা বা মুখ স্পর্শ পায়।পেলো।মামীর স্তনে! আমার শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল।সম্ভবত মামীর শরীরেও।আমি চোখ বন্ধ করে ইচ্ছে করে হাতটা এমন ভাবে ওঠালাম,যেন আবারো আমার হাত মামীর স্তন স্পর্শ করে,স্পর্শ পেলো বল্লাম" স্যরি মামী" মামী আস্তে আমার পিঠে থাপ্পর দিলো।এবং মামীর খিল খিল শব্দে হাসি যেন আমার পৃথিবী ভেঙ্গে চুড়ে ওলটপালট করে দিল।আমার শরীর কাপতে শুরু করল।হয়ত আমি না বুঝলেও আমার ডিএনএ ঠিকই ধরতে পেরেছিলো আদিম খেলার শায়।আমি প্রায় লাফিয়ে উঠে বসলাম।মামীর চোখের দিকে তাকানোর সুযোগ হলো।মামীর চোখে প্রশ্রয়।আমি কাপা কাপা গলায় বল্লাম,তাইতো বলি এতো সুন্দর গন্ধ আসছে কোথা থেকে.....মামী মুখ উচু করে ছাদের দিকে তাকিয়ে হাসলেন।আমি ডান হাতে মামীর মাথা ঝাপটে ধরে অধরে অধর মেলালাম...বাম হাতে বুকে হাত রাখলাম।এ সময় আমার জীবনে দ্বিতীয় বারের মত ট্রাজেডি ঘটে গেল।আমার শরীরে লুকায়িত আঠালো তরল আলো বাতাসের মুখ দেখল এই সামান্য কারনে.... আমার চেতনা ফিরে পেলাম।আবিষ্কার করলাম নিজেকে একটি অনাচারের ভেতর।বিদ্যুত চমকে গেল।এ আমি কি করছি।আস্তে আস্তে মামীর কাছ থেকে দূরে সরলাম।আমাকে অবাক করল মামী আমার আচরনে মোটেও অবাক হচ্ছে না।দু হাত তুলে জোর হাতে ক্ষমা চাইলাম।বল্লাম মাথাটা হটাৎ নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।মামী মৃদু হাসলেন।বল্লেন সমস্যা নাই। আমি আর কথা বাড়ালাম না।বাথরুমে গেলাম।ফ্রেস হলাম।আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করলাম এটা কি হলো? কিছুক্ষন আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখলাম।মনে মনে ভাবলাম পৃথিবীটা এখন ধ্বংস হয়ে গেলে খুব ভালো হত।কিন্তু পথিবী সব সময় পৃথিবীর নিয়মে চলে।অজ যা ঘটল এটাও হয়ত তারই নিয়ম।আমি আমরা অভিনেতা। ফ্রেশরুম থেকে বেরিয়ে দেখে মামী নেই।দরজা খোলা রেখে চলে গেছে কে ছিলেন কামাল আতাতুর্ক? প্রশ্নটা আপাত দৃষ্টিতে অর্থহীন বা সাদা-মাটা । আধুনিক তুরস্কের স্থপতি, যিনি তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর (গাজী), মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ কারী যে ব্যাক্তিটি উসমানী খিলাফতের বিলুপ্ত সাধন করেন, যার নামে ঢাকা শহরে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে , যাকে নিয়ে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কবিতায় স্ততি রচনা করেছেন “ কামাল তুনে কামাল কিয়া”। ইতিহাস ও রাজনীতি বিষয়ে সামান্যতম ধারণা আছে এমন যে কোনো ব্যাক্তি এগুলো জানেন? তাছাড়া মুস্তফা কামাল পাশার সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে আমার লিখা ব্লগ “ মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক ও ইসলাম বিদ্বেষ” এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি বলেন তুর্কী জাতির পিতা কামাল আসলে তুর্কী বংশোদ্ভুতই নন, তিনি একজন ইহুদী এবং ফ্রী-মেসন, তাহলে অনেকেই হয়ত আঁতকে উঠবেন? আসুন আমরা জানার চেষ্টা করি উপরোক্ত দাবীর কোনো সারবত্তা আছে কি না? সালোনিকাঃ সালোনিকা (Salonica) এজিয়ান সাগরের উত্তর তীরে অবস্থিত বর্তমান গ্রীসের একটি সমুদ্রবন্দর এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ১০০ বছর ধরে কন্সটান্টিনিপলের পরেই এটি বাইজেন্টাইন সম্রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসাবে পরিচিত ছিল। ১৪৩০ সালে উসমানী সুলতান ২য় মুরাদ সালোনিকা অধিকার করে নেন এবং এ কে উসমানী সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তখন থেকে প্রায় পরবর্তী ৫০০ বছর ধরে এটি সম্রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং সমুদ্র বন্দর হিসাবে পরিচিত ছিল। শহরটি উসমানী সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তুর্কী মুসলমানেরা এখানে বসবাস করা শুরু করে, শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা ছিল অর্থোডক্স খৃস্টান এবং জাতিগত ভাবে পুর্ব ইউরোপীয়।, উসমানী সম্রাজ্যের পুরো সময় জুড়ে মুসলমানেরা এখানে সংখ্যালঘু ছিল। এ শহরের জনসংখ্যার দ্বিতীয় বৃহৎ পরিবর্তন সাধিত হয় ১৪৯২ সালে স্প্যানিশ ইঙ্কুইজিশনের সময়। স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফার্ডিনান্ড এবং রাণী ইসাবেলা ইহুদীদের স্পেন থেকে বহিস্কার করেন। উসমানী সম্রাজ্যের তদানিন্তন সুলতান দ্বিতীয় বায়েজীদ ইহুদীদের তার সম্রাজ্যে আমন্ত্রন জানান এবং বসবাসের অধিকার প্রদান করেন। স্পেন থেকে বিতাড়িত ইহুদীদের অধিকাংশ তখন সালোনিকাতে বসবাস শুরু করেন করেন। তখন থেকেই শহরটি তিন ধর্মের মিলনস্থলে পরিণত হয়। সালোনিকাতে তিন ধর্মের নারী বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে উসমানী সম্রাজ্যের বৃহত্তম ইহুদী বসতি ছিল সালোনিকাতে, যা দেখে ইসরাইলের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত হন যে, উসমানী ইহুদীদের নিয়ে ইসরায়েল রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ১৯১৩ সালে গ্রীসের কাছে সালোনিকার পতন হয়, তখন থেকে এটা গ্রীসের অন্তর্গত একটি শহর। এই সালোনিকাতেই ১৮৮১ সালে আলি রিজা এবং জুবায়দা দম্পত্তির ঘরে শিশু মুস্তফা’র জন্ম হয়। সাবাতি জেভিঃ সাবাতি জেভি সাবাতি জেভি একজন ইহুদী সেফার্ডিক রাব্বি (Sephardic rabbi, সেফার্ডিক বলতে মুলত বোঝায়, যারা স্পেন থেকে বিতাড়িত হয়ে উসমানি সম্রাজ্যে আশ্রয় নেয়) ছিলেন, এবং কাবালা যাদুবিদ ছিলেন। তার জন্ম ১৬২৬ সালের ১লা আগস্ট স্মিরনা (Smyrna), বর্তমানে তুরস্কের ইজমির এ। তাদের পুর্বপুরুষ ছিল রোমানিয়ান বশদ্ভুত যাদের বসতি ছিল গ্রীসের Patra অঞ্চলে। ১৬৪৮ সালে মাত্র বাইশ বছর বয়সে ইহুদিদের বহুল প্রতীক্ষিত মাসিহ বলে নিজেকে দাবী করেন। ইজমিরের ইহুদীরা অত্যন্ত রক্ষণশীল ছিল, তারা তাকে মাসিহ হিসাবে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানান এবং ১৬৫২ সালে ইজমির থেকে বিতাড়িত করেন । নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি কন্সটান্টিনিপল গমন করেন, সেখানে তিনি কিছু অনুসারী জোগাড় করতে সমর্থ হন। সাবাতি সেখান থেকে সালোনিকাতে পাড়ি জমান এবং সম্রাজ্যের বৃহত্তম ইহুদী বসতিতে নিজের ঘাঁটি স্থাপন করেন। তিনি সারা নাম্নী এক পতিতাকে বিয়ে করেন এবং ধর্ম গ্রন্থে বর্ণিত মাসিহ সংক্রান্ত ভবিষ্যিদবাণী প্রমাণ করেন। (তাদের ধর্ম গ্রন্থে ভবিষ্যদবাণী আছে যে মাসিহ একজন অসতী রমণীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন) এতে তার অনুসারীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পায়। ১৬৬৬ সালে তিনি আবার কন্সটান্টনিপল গমণ করেন, এবং দাবী করেন রাজমুকুট তার মাথায় স্থাপিত হবে। তার এ দাবীর কারণে সুলতান তাকে গ্রেফতার করেন, তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলা হয়, নতুবা রাজদ্রোহীতা এবং ধর্মদ্রোহীতার কারণে তাকে মৃত্যু দন্ড প্রদান করা হবে। তিনি প্রথমটি গ্রহণ করেন এবং ইহুদী রাব্বির পোশাক বর্জন করে মুসলমানদের পাগড়ি পরিধান করেন। সুলতান তাকে আফেন্দী উপাধি প্রদান করেন এবং ভাতার ব্যবস্থা করেন। তার সাথে সাথে তার তিনশত অনুসারী পরিবার ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়। ইতিহাসে এই ধর্মান্তরিত গোষ্ঠি কে Domneh (ধর্মান্তরিত) বলা হয়। সাবাতি জেভি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পরও তার ইহুদী ধর্ম চর্চা অব্যাহত রাখেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণ হিসাবে ইহুদীদের বলেন যে, তিনি মুসলমানদের মাঝে ইহুদী ধর্মের প্রচার করছেন। অপরদিকে সুলতানের কানে ব্যাপারটি গেলে তিনি সুলতানকে বলেন, আমি ইহুদীদের ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। তার প্রচেষ্ঠার ফলে তার অনুসারীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পায়। এরা প্রকাশ্য ইসলাম ধর্ম চর্চা চালিয়ে গেলেও সিনাগগে যেত এবং গোপনে বাড়িতে ইহুদী দের আচার –প্রথা পালন করতে থাকেন। আর এ কারণেই ইতিহাসে এদের গুপ্ত ইহুদী (Crypto Jew) বলা হয়। ১৬৭৪ সালে তিনি তার অনুসারী সহ সালোনিকাতে ফিরে যান এবং ১৬৭৬ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সালোনিকার জনগোষ্ঠির মধ্যে বৃহত্তম অংশ ছিল Domneh. এরা পরবর্তীতে সম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ভুমিকা রাখে। ১ম বিশ্ব যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে সালোনিকাতে ১৫০০০ Donmeh ছিল, ১৯১৩ সালে গ্রীসে অন্তর্ভুক্তির আগে পর্যন্ত তারা সেখানেই বাস করেন। ধর্মত্যাগী হিসাবে মুসলমান এবং ইহুদী উভয়ই তাদের ঘৃণার চোখে দেখত। সাবাতি জেভি তাদের যৌনতার দিক দিয়ে উচ্ছৃংখল হওয়ার স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এদের বিয়ে-শাদী সব সময় নিজেদের মধ্যে হত। বৃষ্টি নেমেছে,রিমঝিম বৃষ্টি, আর কিছুক্ষন পর মাঝরাত পেরোবে,বারান্দার গ্রিলে হাত রেখে অপলক চেয়ে আছি কৃষ্ণচূড়া গাছটার ওপারে,মায়ামহতায় নিমগ্ন,একটু একটু করে অতীতের অবগাহন,মাঝরাতের বৃষ্টিটা বরাবরই দস্যিপনার একচ্ছত্র প্রতিবিম্ব।যতবার ওদিকে চাই কোনও ভাবলেশ ছাড়াই নিজের মাঝেই বিচূর্ণ হয়ে পড়ি।সড়ক বাতির আলোতে সেই রকম রহস্যময়তা বৃষ্টিকে জাপটে ধরে আছে,সেই সাথে বজ্রদ্যুতি,দুষিত সীসার জমাটবদ্ধ বাতাস একটু একটু করে গলতে শুরু করেছে,এই শহর শুদ্ধ হবে,বাঁধা দিলেও কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হবেনা,কোনও না কোনও সুড়ঙ্গ খুজে নেবেই প্রকৃতি, দুচোখের চৌহদ্দিতে ভালবাসার আর্দ্রতা অনুভব করছি।আমি জানি বেঁচে থাকার জন্য এ এক ভুল অনুসঙ্গ বেঁছে নিয়েছি,কি করবো বল, এমন বৃষ্টি যে কালেভদ্রে আসে, ঘুমিয়ে থাকার চেয়ে তার আলিঙ্গন অনেক বেশী স্বস্তিকর,প্রশান্তিময় ও পরিচ্ছন্ন।আমি হন্যে হয়ে মেঘেদের আসা যাওয়া অনুসরন করেছি,ঘৃণাবোধ প্রাক্তন হবে আর আমি বৃষ্টিরছটায় মুক্ত হব।শেষ রাতে যদি ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করে আমি অন্তরাত্মার অনুশাসন পিছনে ফেলে এই নির্জন রাতের অজস্র স্বপ্ন মাড়িয়ে চলে যেতাম সেই সে কবিতার প্রচ্ছায়ায়।মুঠোয় ভরে কষ্ট কিনেছি,বৃদ্ধ গাছের বাকল জুড়ে শুধু নাম লিখেছি, কখনও যদি ফিরে আসো এমনই বৃষ্টির রাতে।যতবার ভাবি আলগোছ পানির স্রোত কেটে মেঘ ছোঁব,ততবার আমার পৃথিবী ভিজে একাকার।খুজে ফিরি অতীতের সব পাগলামি, দিক ভুল করে ফিরে যাই সৃতির অভ্যাসে।তুমি জানালায় চোখ মেলে বসে থেকো আমি জবুথবু সুখ নিয়ে ফিরে যাবো রিমঝিম বৃষ্টির বুক চিরে জলছবির হাত ধরে মুগ্ধতায় মন জুড়ে ,পিছনের দেয়াল ডিঙ্গিয়ে তোমারি চৌকাঠে।তুমি দুঁহাতে মুখ রেখে আমাকে গল্প শোনাবে, রংধনু,রদ্দুরের, জোস্নার,জোনাকির,আর ভালবাসার।আমি আর সোহাগ আগেরদিন একটা ট্রাভেল এজেন্সি থেকে নুব্রা ভ্যালী এবং প্যাংগং লেক যাওয়ার অনুমতি পত্র করে রেখেছিলাম। এতে খরচ হয়েছিল ৭০০ রুপি করে জনপ্রতি, যদিও সরকারি ফি ৪৬০ রুপি। খোকন আমাদের সাথে অনুমতি নেয় নাই কারণ ও যেতে পারবে না। ঢাকা থেকে জরুরি ফোন আসার কারণে খোকন লেহ থেকে ফ্লাইটে দিল্লী হয়ে দেশে চলে যাবে। তাই আমরা তিনজন থেকে যখন দুইজন হয়ে গেলাম একটু বিপদে পরে গেলাম। কারণ আমাদের প্ল্যান ছিল লেহ থেকে নুব্রা ভ্যালী গিয়ে, এক রাত থেকে নুব্রা থেকে সরাসরি প্যাংগং লেক যাব, এবং প্যাংগং লেক থেকে লেহ ফেরত আসব। এভাবে গেলে গাড়ি ভাড়া পরবে প্রায় ১৮০০০ রুপি করে। কিন্তু খোকন চলে যাওয়ার পর আমাদের দুইজনে পক্ষে পুরো গাড়ি ভাড়া করা সম্ভব না। আমরা কয়েকটা ট্যুর অপারেটর এর কাছে খোঁজ নিয়েছিলাম যে তাদের নুব্রা যাওয়ার কোনও প্যাকেজ আছে কি না, আমরা যেভাবে যেতে চাই। কিন্তু কারো কাছেই আমাদের প্ল্যান মত প্যাকেজ পেলাম না। এবং সেইসাথে তারা জানালো যে, তাদের কাছে যদি আরও কেউ আসে তাহলেই গাড়ি দিতে পারবে অন্যথায় পুরো গাড়ি ভাড়া নিতে হবে। সন্ধ্যায় একবার খোঁজ নিতে বলেছিল। এবার আমরা গেস্ট হাউজ এর হাসান ভাই এর শরণাপন্ন হলাম। তার এক ভাইয়ের এজেন্সি থেকে খোঁজ নিয়ে তিনিও আমাদের একই তথ্য দিলেন, যে যদি শেয়ার করার মত লোক পাওয়া যায় তাহলে আমাদের জানাবেন। লেহ শহরে ঘোরাঘুরি করে আমরা যখন সন্ধ্যায় গেস্ট হাউজ এ ফিরে আসি তখন হাসান ভাই আমাদেরকে জানালেন যে একটা গ্রুপ হয়েছে কিন্তু শুধু নুব্রা ভ্যালী যাওয়ার জন্য, আমরা যেতে রাজি আছি কি না। আমি আর সোহাগ রাজি হয়ে গেলাম। লেহ শহরে যেখানেই যাওয়া হোক না কেন ট্যাক্সি ভাড়া বছরের শুরুতেই ফিক্সড করা হয়। আমাদের গাড়িটা ছিল মাহিন্দ্রা জাইলো এবং আমরা মোট যাত্রী ছিলাম ৬ জন। হাসান ভাই চার্ট থেকে মোট ভাড়া বের করে ৬ দিয়ে ভাগ করে আমাদেরকে জন প্রতি ১৮০০ রুপি করে দিতে বলল। আমরা তাকে দুইজনের জন্য ৩৬০০ রুপি দিয়েছিলাম। আমার একটু মন খারাপ হয়েছিল যে, নুব্রা থেকে প্যাংগং লেক যাওয়ার প্ল্যানটা বাতিল হল। সকাল ৭ টায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে রুম ছেড়ে দিলাম। খোকন আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্যে চলে গেল এবং আমরা গেস্ট হাউজে নাস্তার অর্ডার দিয়ে রাস্তার ওপারের একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার এর দোকানে একটু ঢুঁ মারতে গেলাম। অক্সিজেন দোকানের লোকটা প্রথমে আমাদের দুইজনের শরীরে অক্সিজেন এর পরিমাণ মেপে নিল। একজন সুস্থ মানুষের দেহে অক্সিজেন এর পরিমাণ থাকে শতকরা ৯৫ ভাগ। সেখানে সোহাগ এর ছিল ৮৫ ভাগ এবং আমার ৭১ ভাগ। তারপর আমাদের দুইজনকে অক্সিজেন এর মাস্ক পরিয়ে ১ মিনিট রাখার পর আবার মাপল, এবার দুইজনেরই ৯৬-৯৭ ভাগ। কিন্তু আমার যে সুবিধাটা হল, অক্সিজেন নেয়ার সাথে সাথে গত তিন ধরে মাথার ভেতরে যে ঝিম ঝিম ভাব ছিল তা দূর হয়ে গেল। ফলে আমি আর সোহাগ ১০০০ রুপির বিনিময়ে সিলিন্ডারটা তিন দিনের জন্য ভাড়া নিলাম। কিন্তু এই সিলিন্ডারটা আমাদের কোনও কাজেই আসে নাই। তিন দিন ধরে লাদাখ এ থাকার ফলে আমাদের শরীর পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়েছিল। এবং কোথাও আমরা অক্সিজেন এর প্রকট সমস্যা বোধ করি নাই। তিন দিন পর প্রায় সম্পূর্ণ অক্সিজেন সিলিন্ডারটিই আমরা ফেরত দিয়েছিলাম। গুগল থেকে ধার করা একটা ছবি সিলিন্ডার নিয়ে আমরা গেস্ট হাউজ এর ছাদ এ গেলাম নাস্তা করার জন্য। ছাদ এ হালকা ঠাণ্ডার মধ্যে গরম গরম চা আর টোস্ট খেতে বেশ ভালই লাগছিল। চা খেতে খেতে আমাদের গাড়ি চলে আসল। আমরা হাসান ভাই কে বলে রেখেছিলাম গাড়ি যেন আমাদেরকে সবার আগে নেয়, তাহলে আমি আর সোহাগ সামনের সিট এবং মধ্যের সাড়ির জানালার পাশের সিট দখল করতে পারবো। আমরা দ্রুত নাস্তা শেষ করে গাড়িতে গিয়ে জায়গা দখল করলাম। আমাদের আজকের ড্রাইভার এর নাম শরীফ। আমি আর সোহাগ চিন্তা করতেছিলাম যে আমাদের সহযাত্রী কারা হবে, কারণ সহযাত্রীরা যদি মনঃপুত না হয় তাহলে ভ্রমণ সুখকর হয় না। প্রথমে আমরা মার্কেট এর পাশ থেকে আমাদের সমবয়সী দুইজন ভারতীয় ছেলেকে তুললাম। ওদের সাথে পরিচিত হলাম। একজন এর নাম ভাস্কর পেশায় আমাদের মতই ইঞ্জিনিয়ার, আর একজন এর নাম মঞ্জুনাথ সে রিলায়েন্স গ্রুপ এ চাকরি করে(ডিটেইলস ভুলে গেছি)। ওরা ওঠার পর আপার থুচকা রোড এ এক হোটেল এর সামনে থেকে উঠল পঞ্চাশ বছর বয়সী এক শ্রীলঙ্কান নাম সঞ্জয়। সব শেষে উঠল এক মধ্যবয়স্ক ইসরায়েলি নারী। এর মধ্যেই ভাস্কর এবং মঞ্জুনাথ এর সাথে বেশ ভাল গল্প জুড়ে দিয়েছি। পিছন থেকে সঞ্জয় ও আমাদের সাথে যোগ দিল। তো আমরা গল্প করতে করতে খারদুংলা এর পথে যেতে থাকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের গল্প এমন স্তরে পৌঁছাল বাইরে থেকে কেউ বলবে না যে মাত্র আধা ঘণ্টা আগেই আমরা পরিচিত হয়েছি। ভাস্কর নামক ছেলেটা অসম্ভব ট্যালেন্ট। মঞ্জুনাথ ছিল অনেক উচ্চ লেভেল এর মজার মানুষ এবং সঞ্জয় ছিল আমাদের আনন্দের খোরাক। ইসরায়েলি নারী সহযাত্রীর সাথে আমাদের তেমন কথা হয় নাই, কারণ উনি খারদুংলা তে নেমে কোনও এক কারণে আবার লেহ তে ফিরে গিয়েছিল। অবশ্য আমরা চারজন বলতেছিলাম যে, সঞ্জয় এর বকবকানি সহ্য করতে না পেরে চলে গিয়েছিল আর কি। সঞ্জয় কে কিছু বললেই ওর মুখ থেকে একটা বাক্যই বের হত, ও মাই গড। যেমন ও আমাকে জিজ্ঞেস করল আমাদের দেশে কয়টা টিভি চ্যানেল অথবা কয়টা এয়ারলাইন্স এর কোম্পানি আছে। প্রতিটা উত্তরের বিপরীতে সঞ্জয় একটা কথা অবশ্যই বলত যে ও মাই গড, তোমাদের দেশ এত এগিয়ে গেছে। এরকম আরও অনেক মজার মজার ঘটনা আছে যা বলতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। সঞ্জয় এর আরও একটা মজার ঘটনা না বললে হবে না, ওর আরও একটা কথা ছিল যে, তার যে জায়গা পছন্দ হয় সেখানে সে ১৫ বার যায়, তার সব কিছু ১৫ বার করতে হয়, এমনকি সে যখন তার মেইল আইডি আমাদেরকে দিচ্ছিল যে, সে বলতেছিল তার আইডি ১৫ বছর আগের। কিন্তু আইডি টা ছিল গুগল এর জিমেইল। সোহাগ সাথে সাথে জিজ্ঞেস করল যে, ১৫ বছর আগে তো জিমেইল ছিল না। এর জন্য আমরা চারজন ওকে চাপাবাজ ও বলতে শুরু করলাম। আমি, সোহাগ, ভাস্কর, মঞ্জুনাথ সমবয়সী হওয়ার কারণে আমাদের মধ্যে অতি অল্প সময়েই খুব ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেল। ফেলে আসা লেহ শহর আমরা লেহ শহরকে পিছনে ফেলে পাহাড়ি রাস্তা ধরে ক্রমান্বয়ে উপরে উঠতে লাগলাম। এই রাস্তাটা খুবই ভালো ছিল এবং অসম্ভব সুন্দর ছিল। আসলে প্রতিটা রাস্তার সৌন্দর্য বর্ণনা করার মত আলাদা ভাষা আমার কাছে নেই। কিন্তু একটি রাস্তা অন্য আর একটি থেকে সৌন্দর্যের দিক থেকে আলাদা এবং কোনটাই অন্যটার থেকে কম নয়। এ যেন এমন এক প্রতিযোগিতা যা রাস্তার আরোহীদের সৌন্দর্য বিচার করতে মধুর সমস্যায় ফেলে দেয়। চলতে চলতে এক সময় আমরা সাউথ পুল্লু নামে একটা চেক পোস্ট এ চলে আসলাম। সাউথ পুল্লুর উচ্চতা ১৫৩০০ ফুট। এখানে শরীফ আমাদের বিদেশি চার জনের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও অনুমতি পত্রের ফটোকপি এবং ভাস্কর ও মঞ্জুনাথ এর আইডি নিয়ে গেল চেক পোস্ট এ দেখাতে। আমরা গাড়িতেই বসে রইলাম। চেকিং শেষে শরীফ আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিল এবং আমরা আবার চলতে শুরু করলাম। সাউথ পুল্লুর পর রাস্তা বেশ কয়েকটা লুপ দিয়ে উপরে উঠে গেছে এবং একটা লুপ পার হওয়ার পরই রাস্তা খারাপ পেলাম। আরও দুইটা লুপ পার হওয়ার পর আমাদের গাড়ির মাঝের সিটটা ভেঙ্গে গেল। অল্পের জন্য ভাস্কর সঞ্জয় এর উপর পরা থেকে রক্ষা পেল। আমরা গাড়ি থেকে নামলাম। এখানে প্রচণ্ড বাতাস। শরীফ সিট ঠিক করার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু সিট কি আর এই পাহাড়ের উপর ঠিক করা যায়। ও ট্রাভেল এজেন্সি তে ফোন দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে। শেষ পর্যন্ত সিটটাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। সোহাগ সামনে, আমি মাঝের একমাত্র ভালো সিটে, ভাঙা সিটে ভাস্কর ও মঞ্জুনাথ এবং শেষের সিটে সঞ্জয় এবং ইসরায়েলি নারী। কিন্তু আমাদের ভাগ্য এত সুপ্রসন্ন ছিল না।বেশ কিছুদিন কেটে গেল ঝামেলা ছাড়াই। ট্রান্সপোর্ট শীপটা ছুটে চলছে এরিস কন্সটেলেশনের দিকে। আরো দু সপ্তাহের মাঝে পৌছে যেতে পারবে আশা করলো ফ্লেন। অবশ্য হাইপার ডাইভ দিলে কয়েক দিনের মাঝেই পৌছে যেতে পারতো সেখানে, কিন্তু ভাগ্যন্বেশী তরুণ বনিকেরা হাইপার ডাইভ সংবলিত মহাকাশযানে চড়া দুরের কথা কখনো দেখতে পায় বলেও মনে হয় না। নিজের নোংরা ছোট্র সেলটাতে বসে এসব কথাই ভাবছিল ফ্লেন, এমন সময় খাবারের বেলটা মাথার উপর জ্বলতে লাগল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাড়ালো সে। এই মহাকাশযানের বেশির ভাগ যাত্রীই আউট ল, আর বণিক, যারা কখনোই নিয়ম মেনে কাজ করতে শিখে নি। তাড়াতাড়ি খাবার ঘরের লাইনে দাড়াতে না পারলে আজকে রাতের জন্যে তার ভাগ্যে খাবার জুটবে না। অন্ধকারছন্ন খাবার ঘরে ঢুকল সে। মুখ কুচকে দেখলো ততক্ষণে ষাটজনের মত দাঁড়িয়ে গেছে লাইনে। মেজাজ খারাপ করে লাইনে দাড়ালো ফ্লেন। দুইদিন আগে কোথায় ছিল আর এখন কোথায় যাচ্ছে! জীবনটা যে কত তাড়াতাড়ি বাক নেয়! ভাইসরয় ভ্লাদিমির সিরোভের জন্যে সংকাবোধ করলো, হাজার হাজার গুপ্তচর তার জন্যে অপেক্ষা করছে অলিম্পাসে… চোখ তুলে তাকাতে দেখতে পেলো তিনজনের একটা গ্রুপ একপাশে বসে আছে। চেহাড়ায় বেয়াড়া ভাব। অপরিষ্কার ছেড়া পোশাক পরে আছে। তার চোখ পরতে মাঝের জন ত্রুরভাবে হাসল। তার হলুদ দাতের মাঝে বেশ কয়েকটা নকল পাথরের দাত লাগানো, হাতের আম্বার শিখার ছুড়িটা মেঝেতে ধার দিচ্ছে। ভাইসরয়ের সাবধাণবাণী মনে পরে গেল তার। সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। যে কোন সময় শত্রুরা তার উপর আক্রমণ করতে পারে। অন্যদিকে তাকিয়ে লাইনে সামনে বাড়ল সে। **** গ্যাস জায়ান্টটার একবারে কাছেই ছোট্র একটা উপগ্রহ। গাঢ় নীল বর্ণের গ্রহটার পাশেই যে একটা উপগ্রহের কক্ষপথ থাকতে পারে আপাতদৃষ্টিতে কেউ চিন্তা করবে না। গ্যাস জায়ান্টটার আউটার লেয়ারের পাতলা গ্যাস উপগ্রহটার গ্রেভিটিতে বাধা পরে তার দুইপাশে ডিস্কের মত ঘিরে আছে। তাই উপগ্রহটার দুইপাশে দুর্লভ গ্যাসের স্পাইরাল বাহু তৈরি হয়েছে। এই উপগ্রহের আরেকটা বৈশিষ্ট অফ দ্য রেকর্ড এটি বিজ্ঞান একাডেমির একটা বায়োটেক লেবরেটরি। এমনকি বিজ্ঞান একাডেমির বিখ্যাত অনেকেই এই লেবরেটরির অস্তিত্ব জানে না। জ্বলন্ত স্বর্গে আপনাকে স্বাগতম কাউন্সিলম্যান জশোনি, মাথা নুইয়ে তাকে সম্মান দেখালো উপগ্রহের কেয়ারটেকার আম্ব্রিন কেন। আপনাকে এই দুর্গম এলাকেতে দেখতে পাবো কখনো ভাবতে পারি নি। হাহ জ্বলন্ত স্বর্গ, মনে মনে ভাবল জশোনি। কিংবা জ্বলন্ত নরক! কি বা আসে যায়! আকাশের দিকে তাকালেন তিনি, গ্যাসজায়ান্টটার নীল রঙ্গে পুরো আকাশ আলোকিত হয়ে আছে। এক প্রান্তরে দেখা যাচ্ছে উপগ্রহের স্পাইরাল ডিস্ক। চলুন ল্যাবে যাওয়া যাক! হন্তদন্ত হয়ে তাকে মহাকাশ যান থেকে ল্যাবের পথ দেখালো আম্ব্রিন। ল্যাবটা জ্বলন্ত স্বর্গের মাটির অনেক নিচে। কিত্রিমভাবে অক্সিজেনের সর্বরাহ করা হয় এখানে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাসের গবেষণা এখানে করা হয়। এমনকি সিন্ড্রা গ্রহে এককালে বিজ্ঞান একাডেমি যে ভাইরাস এক্সপেরিমেন্ট করেছিল সেটাও হয়তো এখানেই সৃষ্টি করা হয়েছিল। এলিভেটর দিয়ে অনেকদূর মাটির নিচে নামলো তারা। আশে পাশে প্রচন্ড ঠান্ডা একটা আবহাওয়া বিরাজ করছে এখানে। এলিভেটরের দরজা খুলতে উষ্ণতা অনুভব করল, বিশাল একটা হলওয়ে সামনে মিলিয়ে গেছে। উজ্জ্বলভাবে আলোকিত করা আছে পুরো এলাকাটা। কাউন্সিলম্যান জশোনি! হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এল একজন। আপনার আগমনের সংবাদ পেয়ে আমরা অনেক খুশি হয়েছি! আমি ভারপ্রাপ্ত চিফ একাডেমিক ডক্টর ডিনগান। চীফের অনুপস্থিতিতে আমি আপনাকে এখানে স্বাগত জানাচ্ছি! তোমার চীফ কোথায় গেল? বিব্রত দেখালো ভারপ্রাপ্ত চীফকে। আসলে জরুরী কাজে হঠাৎ করেই পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রউনা দিয়েছেন চীফ। আসুন আপনাকে আমাদের গবেষণা দেখাই। এই বিশ্বগুলো কখনো বুঝতে পারে না এখানকার টেকনলজি গুলো তাদের জীবন কত সহজ করে দিচ্ছে! সামনে পথ দেখাতে থাকল ডিনগান। তাকে অনুসরণ করতে লাগল জশোনি। আশেপাশের ল্যাবগুলোতে ঢুকে কোনটাতে কি গবেষণা হচ্ছে কিংবা কি কি ফল পাওয়া গেছে বিস্তারিত বোঝাচ্ছে ডিনগান, কিন্তু সেদিকে মন নেই জশোনির। সবাই ভাবছে বিজ্ঞান একাডেমির রুটিন ভিজিটে এসেছে সে। কিন্তু তার ইচ্ছে পুরোপুরি ভিন্ন। বলুন চীফ ডিনগান, বিজ্ঞান একাডেমির আইসোলেটেড একটা ল্যাব আপনাদের এটি, হয়তো একশো বছর আগে এই ল্যাবের অনেক প্রয়োজনিয়তা ছিল, এখন তো বিজ্ঞান একাডেমি আপনাদের অর্থায়ন করাও বন্ধ করে দিয়েছে। তো এখন পর্যন্ত কিভাবে আপনাদের জ্বলন্ত স্বর্গ টিকে আছে? মুচকি হাসল ভারপ্রাপ্ত চীফ, বিজ্ঞান একাডেমি যাবতীয় অর্থায়ন বন্ধ করে দিলেও বেসরকারি সংস্থার কোন অভাব নেই! অসংখ্য সংস্থা বিভিন্ন গবেষণার জন্যে আমাদের অর্থায়ন করছে… বলতে গেলে বিজ্ঞান একাডেমির অধিনে থাকার চেয়ে এখন আমাদের সু্যোগ সুবিধা বেশি। প্রটোকলের অধীনে থাকতে হয় না। গবেষণার জন্যে তাদের জবাবদিহী করতে হুয় না। হুম, আনমনে গ্লাস উইন্ডো দিয়ে একটা ল্যাবের ভেতরকার দৃশ্য দেখতে থাকল জশোনি। একটা ধাতব বাহু একটা মাংশপিন্ডের উপর সবুজ তরল স্প্রে করছে… দেখতে দেখতে মাংশপিন্ডটা গলে মেঝেতে পরে গেল। বোঝার কোন উপায় নেই যে একটু আগে এটা কোন অর্গানিক ফ্লেশ ছিল। গুজব ভাসে আপনাদের এখানেই নাকি সিন্ড্রা মিশনের ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল? মুচকি হাসল জশোনি। সেখানকার মর্মান্তিক পরীক্ষার জন্যে টেস্ট সাবজেক্ট হতে হয়েছিল হাজারো যুদ্ধবন্দিকে? তখনকার বিজ্ঞান পরিষদ ফলপ্রসু এক ভাইরাস মানব দেহে কিরকম বিক্রিয়া করে পরীক্ষা করার জন্যে ভয়ঙ্কর এক অভিযান চালায় সিন্ড্রায়… আনমনা হয়ে আবার ঐ ল্যাবে তাকাল সে। আরেক ধরণের মাংসপিন্ড আবারো দেয়া হয়েছে টেস্ট করার জন্যে… হ্যা আমরাই ভাইরাসের জিনোম ডিজাইন করি। গর্বের চোটে কাধ চিতিয়ে দাড়ালো ডিনগান। tx-9 হচ্ছে ভাইরাসটার নাম। সেটাই প্রায় একশো বছর আগে সিন্ড্রাতে এক্সপেরিমেন্টে ব্যবহার করা হয়… এবং প্রচন্ডভাবে ব্যার্থ হয় বিজ্ঞান একাডেমি। ব্যাঙ্গাত্বকভাবে হাসলো জশোনি। হ্যা তখন আমরা ব্যার্থ হয়েছিলাম, দৃঢ় কণ্ঠে বলল ডিনগান। সেটা একশো বছর আগের কথা… কিন্তু এখন আমরা ব্যার্থ হবো না। চমকে উঠল জশোনি, এখন আবার এই ভাইরাস বানাচ্ছেন নাকি! হ্যা, মুচকি হাসলো ডিনগান। এবং এবার এই ভাইরাস অবশ্যই কাজ করবে! বিজ্ঞান একাডেমির নাগালের বাইরে আবারো সেই ভাইরাস তৈরি করা হচ্ছে! চিন্তিত হয়ে পরল জশোনি। তার মনে পরে গেল কাউন্সিল থেকে আইন করা হয়েছিল যেন মানব ধ্বংসকারী ভাইরাস আর কেউ বিজ্ঞান একাডেমির অনুমতি ব্যাতিত সৃষ্টি করতে পারবে না। এখানে ঠিকই তৈরি করা হচ্ছে… কে অর্থায়ন করছে এই প্রজেক্টটা? সুপ্রিম কমান্ডার কর্নেলিয়াস আহটামাস। সরল মনে বলল ডিনগান। চোখ সরু হয়ে গেল জশোনির। আহটামাস? এই লোক কি পরিকল্পনা করছে তার মাথায় আটলো না। নিরিগিস স্টেশনের কমান্ডার একে তো বিজ্ঞান একাডেমির মিশনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এখন দেখা যাচ্ছে তিনি নিষিদ্ধ ভাইরাস নতুন করে বানাচ্ছেন! প্রচন্ড গড়বড়ে মনে হলো সবকিছু জশোনির কাছে। সুপ্রিম কমান্ডার আহটামাস? উনি এই প্রোজেক্টটা নতুন করে শুরু করেছেন? এটি দিয়ে তিনি কি করবেন? তিনি মনে হয় একা নন এই প্রজেক্টের অর্থায়নকারি হিসেবে, অনিশ্চিত শোনা গেল তার গলা। কিন্তু প্রজেক্ট সফল হয়েছে এবং তিনি এটার প্রথম ব্যাচ কিনে নিয়েছেন আমাদের কাছ থেকে… কিনে নিয়েছেন? ভ্রু কপালে উঠল জশোনির। কর্নেলিয়াস tx-9 ভাইরাস কিনে কি করেছেন?? উত্তেজিত হয়ে উঠল সে। কেন আপনি জানেন না? অবাক মনে হলো ডিনগানকে। বিজ্ঞান একাডেমির আরেকটি সিন্ড্রা মিশনে এই ভাইরাস এক্সপেরিমেন্ট করার চেষ্টা করেন সুপ্রিম কমান্ডার… এটা তো বিজ্ঞান একাডেমির অথরাইজড মিশন ছিল… অথরাইজড মিশন ছিল… বিড়বিড় করছে জশোনি, কিন্তু কাউন্সিল তো জানতো না কর্নেলিয়াসের ভাইরাস টেস্ট করা হবে সেখানে… কেউ ই জানতো না। কাউন্সিল মিশনটা এপ্রুভ করেছিল রুটিন চেকআপের জন্যে, জীবনের অস্তিত্ব একশো বছর পর সেখানে আবারো ফিরে এসেছে কিনা খোজার জন্যে… সবকিছু একসূত্রে বাধার চেষ্টা করছে সে, কর্নেলিয়াস যে কি খেলা খেলছেন তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সেটা। হঠাৎ তার মনে হলো সবকিছু একসূত্রে গেথে ফেলতে পেরেছে সে। সিন্ড্রা মিশন, লিও জিমের মাথায় কিত্রিম একটা মেমোরি বসানো হয়েছে, সেটা কর্নেলিয়াসই বুঝল… কিভাবে? তাদের মাথায় যে স্মৃতি আছে সেটা সেটা নকল ছিল! এটাই তো ট্রায়ালের সময় বলেছিল কর্নেলিয়াস, কেন? কিভাবে জানল সে, যখন বিজ্ঞান একাডেমির অন্যান্য ডক্টররা বুঝতেই পারলো না… ডিনগান! উত্তেজিত হয়ে গেল জশোনি, আপনি কি বলতে পারেন পরের সিন্ড্রা মিশনটা সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল কি না? অবশ্যই! অবাক দেখালো ডিনগানকে। তার চিন্তা পরতে পারলো জশোনি, ভাবছে বিজ্ঞান একাডেমির কাউন্সিলর কিভাবে বিজ্ঞান একাডেমির মিশন সম্পর্কে কিছু জানে না! দ্বিতীয় মিশনটাও ব্যার্থ হয়েছে, কিন্তু ভাইরাসটা নয়, মিশনটা ঠিকভাবে পরিচালিত করা হয় নি, কিভাবে আমি ঠিক জানি না… ঠিক আছে চীফ ডিনগান, ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে আছে জশোনি। কিন্তু বাইরে তার অমায়িক হাসিটা হাসল, আমার তাহলে এখন ফিরতে হবে অলিম্পাসে, আপনাদের কাজের প্রশংসা অবশ্যই আমি করবো ভাইসরয়ের কাছে, হালকা নড করে ফেরার পথ ধরল সে। ****** ছোট্র সেলটার ভেতর ঘুমিয়ে আছে ফ্লেন। রাতদিনের হিসেব এখানে বোঝা যায় না, শুধুমাত্র হালকা লাল আলো সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে তার রুমের মাঝে ভেসে আসে রাতের বেলা। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে লাইট নিভে যায়। তখন সবাই বুঝে নেয় দিনের শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ ঘুমের মাঝে দম বন্ধ হয়ে এলো ফ্লেনের। চারপাশ যেন তাকে জাপটে ধরেছে। চোখ খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখলো না। বিকট একটা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তার বা পাশ থেকে। আশেপাশে হাতরাতে লাগল, কিন্তু কিছুই তার ধারের পাশে নেই। হেই তুই ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? হেড়ে গলায় বলে উঠল কে যেন, দড়জাটা লাগিয়ে পাহাড়া দে! বলতে বলতে তার চোখের উপর থেকে হাত সরালো লোকটা। হঠাৎ উজ্জ্বল আলোতে কিছু বুঝতে পারলো না ফ্লেন। তাকিয়ে দেখলো গোলগাল চেহাড়ার বিদঘুটে এক বেন্ডিট তার গলায় আম্বার শিখার একটা ছুড়ি ধরে রেখেছে। হুশ! ইশারায় বুঝিয়ে দিল চিৎকার দিলে তার ফল ভালো হবে না।বুঝতে পারলো ফ্লেন, আলতো মাথা ঝাকালো। তখনো মাথা ঠিকভাবে কাজ করছে না তার। বুঝতে পারছে না কি ঘটছে। ছুড়ি ধরা হাতের দিকে তাকালো। এটাকেই দেখেছিল সে খাবারের লাইনে দাড়াবার সময়। নিশ্চয় খারাপ কিছুই ঘটতে যাচ্ছে। ঘুম শেষ হয়েছে কচি খোকা? বলে উঠলো বেন্ডিটটা। ফ্লেন খেয়াল করলো কথা বলার সময় তার পাথরের নকল দাত চকচক করছে আলোতে। এবার বল কোথায় যাচ্ছিস তুই! এরিস কন্সটেলেশনে। শার্ন গ্রহে খনিজ গ্যাসের সন্ধানে, দুর্গন্ধটা কোনমতে সহ্য করে বলল ফ্লেন। মিথ্যা! তার ঘাড়ের পেছন থেকে চিকন চাকন একটা ছেলে বলে উঠল। তার হাতেও ধরা আরেকটা ছুড়ি। হলুদ আলো জ্বলছে সেটা থেকে। চোয়ালের হাড্ডি বেড়িয়ে পরেছে তার, এক চোখে তৃকোণাকার একটা গগলস পরনে। ভাবছিস আমরা কিছু বুঝি না! তার দিকে ছুড়িটা বাড়ালো, ভাবছিস আমরা চিনি না কে বণিক আর কে উচ্চবর্ণের মানুষ! যা আছে সব বেড় কর! কোন জবাব দেবার প্রয়োজন বোধ করলো না ফ্লেন, ঝড়ের গতিতে তার মাথায় চিন্তা চলছে। চিকন বেন্ডেটটা উঠে তার কাপড়চোপড় উলটে পালটে দেখলো, তার ব্যাগ উলটে জিনিস পত্র খুজে দেখলো! কিছু পেল না। কই রেখেছিস বল! হেকে উঠল সে। হঠাৎ দেখতে পেল দড়জার সামনের জন আগ্রহের চোটে দরজা ফেলে তাদের দিকে এগিয়ে এসেছে, চোখ বড় বড় করে তার ব্যাগের উলটানো কাপড়চোপড় দেখছে। তুই আবার এদিকে এসেছিস ক্লব! বলতে বলতে ফ্লেন এর জুতো তুলে ছুড়ে মারল ক্লবের দিকে। বললাম না দরজা পাহাড়া দে তুই! উড়ন্ত জুতার বারি খেয়ে নিজের দায়িত্বে আবারো ফিরে গেল ক্লব। যথেষ্ঠ হয়েছে, বিরক্তিতে তার ছুড়িটা গলার কাছে ঘেষে ধরল মোটা বেন্ডিট। কোথায় টাকা পয়সা লুকিয়েছিস বল! তুই ফিলিপ লেন নোস, তুই কোন গ্যাসের খোজেও আসিস নি! এখন গ্যাস উত্তোলনের সময় না, তোকে কেউ বলে দেয় নি? তোকে দেখতে মোটেও খনিজ আকরিক সংগ্রাহক বলে মনে হয় নি! এত চর্বি কেনো তোর শরীরে? গ্যাস সন্ধানি কেউ তো ভরপেট খেয়ে বেড়ায় না? তোর তো তাদের মত গন্ধও শরীরে নেই! যাক এতক্ষণে বুঝল শরীরে এই বিচ্ছিরি গন্ধ থাকা মানে সে একজন আউটারওয়ার্ল্ডের লোক। আমি এখনো খনিজ সংগ্রাহক নই! জোর দিয়ে বলল সে। আমার বাড়ি হোম এ! বাবা মারা যাওয়ার পর ভাগ্যের সন্ধানে বেরিয়েছি, মনে হলো আকরিক খোজার মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো… মিথ্যা! চিকনজন তখনো পায়াচারি করছে আগে পিছে, কোথায় তোর সব টাকা? দেখো এখান থেকে ভালয় ভালয় বেরিয়ে যাও! রেঞ্জাররা দেখতে পেলে… রেঞ্জাররা কচু করবে, বলতে বলতে তার পাশের পকেট থেকে কিউকার্ডটা বেড় করলো মোটা বেন্ডিটটা। খুশিতে আসল নকল সব দাত বেড় হয়ে গেছে। এবার কি বলবি তুই? এটাও আকরিক সন্ধানী ভাগ্যান্বেসী যুবকেরা রাখে? প্রমোদ গুনলো ফ্লেন, কিছু একটা বলতে যাবে, তখুনি প্রচন্ড ঝাকিতে ছিটকে পরল একপাশের দেয়ালে। কেন্দ্রীয় আলো সব কাপতে কাপতে নিভে গেল। একপাশে তার ছুড়ি ধরা বেন্ডেটটা গালমন্দ করছে কাউকে। কি হলো প্রচন্ড ভয় পেয়েছে ক্লব। রুনিন আমার মনে হয়… কথাটা শেষ করার আগেই আরেকটা ধাক্কায় কেপে উঠল পুরো শীপটা। উপরের সাইরেনটা তীক্ষ্ণ আওয়াজ তুলে বাজতে শুরু করল। ওহ ইশ্বর! প্রচন্ড ভয়ে মাথার ঘাম মুছল মোটা বেন্ডিট রুনিন। স্পেস আর্মাডা!নির্মলা সেদিন ধর্ষিত হলো। নির্মলা ১২ বছরের একটি মেয়ে, পিউবার্টির গ্রাসে শিশুকাল হারিয়ে ধর্ষণযোগ্য হয়েছিলো সম্প্রতি। সুযোগসন্ধানী পুরুষ সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাবে এতে অবাক হবার কী আছে? আর সেজন্যেই অনায়াসে বলে ফেলা যায় এই সেদিন নির্মলা ধর্ষিত হলো। এরপর হয়তো বা সে স্নান করলো, পটল আর ঝিঙের ব্যাঞ্জণ রাঁধলো, ঘর মুছলো, কাজের মেয়ে হয়ে জন্মেছে যেহেতু, সামান্য ব্যাপার নিয়ে বেশি হ্যাংলামি করে সবাইকে বিব্রত করাটা কি তার উচিত হবে, আপনারাই বলুন? নির্মলা নামটাও ঝামেলার। একটা সাম্প্রদায়িক উগ্রতা আর সন্দেহের গন্ধ বুনে দিয়ে যায়। তবে নির্মলার ধর্ষণটা তেমন কোনো ঘটনা ছিলো না। এটা অন্য সব সাধারণ ধর্ষণের মতই ছিলো। পুরুষ দেখেছে নারীকে, উত্তেজিত হয়েছে, সুযোগ পেয়ে পৌরুষত্ব দেখিয়েছে। খুবই সিম্পল ব্যাপার। তবে সমস্যা হলো, সবার চিন্তাধারা এক না। হ্যাঁ, ধর্ষণ অবশ্যই একটি অপরাধ, তবে কোন প্রেক্ষিতে, কিসের ইন্ধনে ধর্ষণ করা হয়েছে সেটাও তো বিবেচনায় রাখতে হবে, না কি! সুমনার মধ্যে বিবেচনাবোধ, এবং সহিষ্ণুতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সুমনা হলো নির্মলা যে বাসায় কাজ করে, তার গৃহকর্ত্রী। আধুনিক এবং সচেতন নারী হিসেবে তার যথেষ্ট গর্ব আছে। সোশাল মিডিয়ায় মেয়েদের বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেইজে নারী অধিকার, নারীবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা সে নিয়মিত শেয়ার দিয়ে থাকে। এছাড়া প্রোফাইল পিকচারে বেশ কিছুদিন যাবৎ সে “Stop rape, no means no” শিরোনামের ছবি ঝুলিয়ে রেখে তার অনমনীয় এবং দৃঢ় মানসিকতার প্রমাণ রেখেছে। এমন কী ম্যারেজ ডেতেও তা পাল্টায় নি। নিন্দুকেরা অবশ্য তাকে অনলাইন সর্বস্ব চোটপাটকে ইঙ্গিত করে নানা কথা বলে। তাদেরকে ভুল প্রমাণের আজ দারুণ এক সুযোগ। তবে এক্ষেত্রে তাকে সুযোগসন্ধানী বলাটা মনে হয় বেশি রূঢ় হয়ে যাবে। সে আসলেই ভীষণ আঘাত পেয়েছে। ফুঁসছে। -আমজাদ তোকে ভেতরে যেতে বললো, আর তুই গেলি? তোর মাথায় কোনো বুদ্ধি নাই? নির্মলা কথার জবাব দেয় না। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। -কথা বলিস না কেন গাধী মেয়ে? তোকে এত কিছু শিখায়ে দেই, আর তুই সব ভুলে যাস? রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকে সুমনা। বারো বছর বয়সে এমন একটা অভিজ্ঞতা হলো মেয়েটার, এর ছাপ কী সহজে যাবে? স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে নিশ্চয়ই অনেক সময় লেগে যাবে তার? বারো বছর বয়সে একটা মেয়ে কী পারে? কী বোঝে? এই বয়সে সুমনাকে মা খাইয়ে দিতো, দূরপাল্লার বাসে যাত্রাবিরতিতে বাবা সিগারেট টানতে নিচে নামলে ভয়ে অধীর হতো সুমনা বাবাকে রেখে বাস চলে যায় কি না ভেবে। তারও অবশ্য দোষ আছে। এভাবে ভরদুপুরে নিঝুম পাড়ায় ডিম আনতে দোকানে পাঠানোর খুব কি দরকার ছিলো নির্মলাকে? তাদের পাড়ায় এমন ঘটনা আগে ঘটে নি। তবে সেটা তো আর তার দূরদর্শী চিন্তার ঘাটতির পক্ষে সাফাই গাইতে পারে না! রাগ আর ক্ষোভের সাথে অনুশোচনা যুক্ত হয়ে তাকে পোড়াতে লাগলো শুকনো পাতার মতো। টুটুলকে এখনই জানানো দরকার ঘটনাটা। থানা-পুলিশ-সালিশ যা করার ও করবে। এত ভার সে আর নিতে পারছে না। # -রেপটা তাহলে আমজাদই করেছে, না? শিওর তো? নিরুদ্বিগ্ন কন্ঠে টুটুল জিজ্ঞেস করে। -আরে হ্যাঁ, কয়বার বলবো। নির্মলা ডিম কিনতে দোকানে গিয়েছিলো, তখন তাকে দোকানে ডিম নেই বলে তার সাথে সামনে এগুতে বলে। তারপর নতুন কন্সট্রাকশনের ওখানে নিয়ে গিয়ে রেপ করে। কুত্তার বাচ্চা... -হু, কুত্তার বাচ্চাই বটে। কঠিন শাস্তি পাওয়া উচিত ওর। আমি ব্যবস্থা নেবো। -প্লিজ কিছু একটা করো! এসব জুলুম সয়ে যাবার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। আমি আর নিতে পারছি না। বারো বছরের একটা মেয়ে, উফ! -হ্যাঁ, বুঝতে পারতেছি। তুমি এত পেরেশান হয়ো না তো। যাও রেস্ট নাও। আমি আরেকটু ভাবি ব্যাপারটা নিয়া। সাধারণত দেখা যায়, ধর্ষকেরা আকারে আকৃতিতে গরিলার চেয়ে বড় এবং ভিটো কর্লিয়নির চেয়েও ক্ষমতাবান হয়ে থাকে। আর ধর্ষণের পর যত সময় পার হয়, তাদের এই ক্ষমতা এবং আকার আকৃতি জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। আমজাদের সাথে ব্যাপারটার সুরাহা করার জন্যে দেখা করতে গিয়ে টুটুল এই অদৃশ্য বর্ধনের আঁচ কিছুটা হলেও পেলো। তাকে বেশ প্রকাণ্ড এবং আত্মবিশ্বাসে ভরপুর দেখাচ্ছিলো। টুটুলকে দেখে অবশ্য প্রথমে কিছুটা চুপসে গেলো। তবে ডিফেন্স মেকানিজম দ্রুতই কাজ করা শুরু করলো। সে তো আর যে সে ব্যক্তি নয়, সে একজন ধর্ষক, একজন নারীর জীবনের চরমতম আঘাত করেছে নৃশংস লিপ্সায়, তাকে ভয় পেলে মানায়? এদিক ওদিক তাকিয়ে, অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে কেশে বরং টুটুলই নিজের অবস্থানটাকে নেতিয়ে ফেললো। -কী লাগবে ভাই? অপ্রস্তুত টুটুলকে আন্তরিকতার সাথে জিজ্ঞেস করে সে। দৃষ্টিতে কিছুটা সতর্কতা। -ভাই ঐ রেপের ব্যাপারে একটু কথা বলতাম আর কী। টুটুল এভাবে প্রসঙ্গটা তুলবে তা সে কোনোভাবেই আঁচ করতে পারে নি। প্রচণ্ড বিব্রত হয়ে ঢোঁক গেলে সে। তার অণ্ডকোষ কুঞ্চিত হয়ে যায়। -ফাইজলামি করেন আপনি? কী কইতে চান? গলা চড়িয়ে হুমকি দেয় সে। পরিস্থিতিটা এবার যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ টুটুলও নার্ভাসনেস কাটিয়ে উঠে বল ফিরে পেয়েছে। সেও পালটা গলা চড়ায়। -আমজাদ, আমার সাথে গলা চড়াইলে আমিও গলা চড়ামু। আপনি নির্মলাকে রেপ করছেন ঐটা নিয়া পরামর্শ করতে আইছি। নির্মলা আমার কিছুই লাগে না। তাই সে রেপ হইছে এই কথা মাইক চালায়া বইলা বেড়াইলেও আমার কিছু আসবে যাবে না। ব্যাপারটা বুইঝেন। বেশি তাংফাং কইরেন না, দোকানে এমন ক্যাওস বাঁধামু, ব্যবসা লাটে উঠবো। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনুকূলে নিয়ে নেয় টুটুল। রক্তচক্ষু দিয়ে নীরব শাসানি দিয়ে আমজাদকে বুঝিয়ে দেয় যে খামোখা বিতণ্ডা করে কোনো লাভ হবে না। বিপদ বুঝতে পেরে আমজাদ সুরসুর করে বের হয়ে আসে। -কী চান আপনে? তার কণ্ঠের শঙ্কা টুটুলকে সন্তুষ্ট করে। -বের হন। হাঁটতে হাঁটতে বলি। দোকান থেকে বের হয়ে তারা নির্মাণাধীন ভবনটার কাছে যায়। ঈদের ছুটিতে কাজ থেমে আছে। ভবনটা একদম নির্জন হয়ে আছে। এ ধরনের আলাপের জন্যে চমৎকার। -এখানেই তো কাম করছিলেন তাই না? -ভাই, আমি বুঝায়া বলি ব্যাপারটা। শোনেন... -আরে এত বুঝানোর তো কিছু নাই। আমিও তো পুরুষ, আমি কি বুঝি না বলেন? টুটুলের এমন আচম্বিত সহৃদয়তায় আমজাদ বিষম খায়। কোন দিকে যাচ্ছে কথাবার্তা? -হ্যাঁ বোঝেনই তো, মানে... -হঠাৎ সেক্স উইঠা গেছিলো, তাই তো? ভাই জানি এসব।কী বুঝান আমারে? আসলে এরকম একলা পরিবেশে হঠাৎ দেখতে শুনতে ভালো একটা মাইয়া আসলে তো এমন ভাবনা মাথায় আসতেই পারে। তবে আপনি যদি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারেন, তাইলে কীসের আশরাফুল মাখলুকাত হইলেন কন? আর মেয়েটার বয়সও কম, মাত্র ১২ বছর। আপনি কামডা ভালো করেন নাই মোটেও। কিছুটা কঠোর হয়ে আসে টুটুলের গলা। তবে ইতমধ্যে আমজাদ তার দ্বিধা কাটিয়ে উঠেছে। এতক্ষণে সে আত্মপক্ষ সমর্পণের একটা সুযোগ পায়। -১২ বছর? কী বলেন? আপনি শিওর? আমি মিনিমাম ১৬ ভাবছিলাম। তার গ্রোথ তো বেশ ভালো। কোনোভাবেই বুঝতে পারি নাই আমি। ছিহ, ১২ বছরের একটা মেয়েকে...নাহ এইটা আমি কী করলাম! শিট! শিট! শিট! হতাশায় দু বাহুর ভেতর মাথা গুঁজে দেয় সে। -হ্যাঁ, ভুল হওয়াই স্বাভাবিক। আর হিন্দু মেয়ে তো ওড়না পরবে না, পর্দা করবে না। এসবই তো অপসংস্কৃতির ফসল। সে যদি পর্দানশীন মুসলিম মেয়ে হতো, তাহলে কী আর আপনি রেপ করতে পারতেন? পারতেন না। তবে যত যাই কন, আপনি রেপিস্ট। আপনি অপরাধ করছেন। আপনাকে শাস্তি পাইতে হবে। আবারও বলি, নির্মলা আমার বইন না, যে সে রেপড হইছে এই কথা প্রচার পাইলে আমার কোনো সমস্যা হইবো। যত প্রচার হবে, সমস্যা আপনার বাড়বে। আমার হারানোর কিছুই নাই এখানে। -বুচ্ছিরে ভাই, আপনে কী চান সেইটা কন! -ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মেয়ের চিকিৎসা খরচ, তারপর মানসিক হয়রানি... -কত? -৫০ হাজার টাকা। -এটা তো আপনি বিবেচনার কথা বললেন না। সেদিন দেখলাম টাঙ্গাইল না কোথায় জানি এক মহিলারে রেপ করছে, সালিশে ১০ হাজার টাকা দিছে ক্ষতিপূরণ। -ভালোই তো খবর রাখেন দেখি। ভাই টাঙ্গাইল আর ঢাকার হিসাব এক হবে বলেন? আর আপনার অপরাধটা কিন্তু বেশি। আপনি নাবালিকা রেইপ করছেন। -আমি বুঝতে পারি নাই... -সে কথা কী এখন বললে হবে? ঘটনা তো ঘটায় দিছেন। আমার কিন্তু কানেকশন কম না। আমার ওয়াইফের সাথে বহু নারীবাদী সংস্থার চেনাশোনা আছে। -বাল ফালান নারীবাদী সংস্থা দিয়া। কোনো প্রমাণ দেখাইতে পারবেন যে রেপ করছি? -ঐ মিয়া মুখ খারাপ কইরেন না। প্রমাণ দেখাইতে পারবো কি না? দেখতে চান আমি প্রমাণ দেখাইতে পারি কি না পারি? আমি তো কইছি আমার হারানোর কিছুই নাই। কচ্ছপের কামড় চিনেন? আমি কচ্ছপের কামড় দিমু কইলাম। অত সহজ ভাইবেন না কেসটা। টাকাটা আজকেই দিবেন। -আজকেই দিবো মানে? -না দিলে সালিশ হবে, কোর্টকাচারি হবে, পেপারে নিউজ যাবে, ফেসবুকে আপনার ছবি ভাইরাল হবে। আপনারে গ্যারান্টি দিয়া বলি, আমার সাথে যুৎ করতে পারবেন না। তবে এত হ্যাপা কইরা আমার কী লাভ বলেন? আর আপনি একটা ভুল কইরা ফালাইছেন ঝোঁকের মাথায়, সেটা তো আমি কনসিডারেশনে নিতাছিই। কিন্তু তাই বইলা অপরাধটাও মাপ করনের মত না। টাকাটা দিয়া দেন আজকেই। আমার দরকার। আমি জানি আপনার কাছে ক্যাশ টাকা আছে। খোঁজ নিয়াই আসছি। সময় হলো দশ মিনিট। আর কোনো মূলামূলির চেষ্টা করবেন না। টাইম লস হবে। আপনার জান, মান সবই কিন্তু আমার হাতে, মনে রাইখেন। * প্রফুল্ল মনে বাসায় ফিরে সুমনার কাছে গিয়ে শিষ দিয়ে হিন্দি গানের সুর ভাঁজতে থাকে টুটুল। প্রচণ্ড আঘাতে বিমুঢ় সুমনা তার এই প্রফুল্লতার কোনো কারণ খুঁজে না পেলে ব্যথিত হয় টুটুল। অনুযোগ ঝরে পড়ে তার কন্ঠে, -তুমি ভাবছো যে আমি শুধু শুধুই তোমাকে বলছি যে ব্যবস্থা করবো? বিশ্বাস রাখো নাই, তাই না? এই দেখো সোনা, কড়কড়া ৫০টা এক হাজার টাকার নোট। শালা বাইঞ্চোত মূলামূলি করার চেষ্টা করতেছিলো অবশ্য, তবে... -তবে কী? এটা কীসের টাকা? -আরে আমজাদের কাছ থেকে জরিমানা আনলাম। রেপের জরিমানা। -একটা বাচ্চা মেয়েকে রেপ করলো আর তুমি কিছু নোট এনে আমাকে দেখিয়ে বলছো বিচার করেছো? তুমি?? এই তোমার বিবেক?? থু মারি আমি তোমার টাকায়। থুহ! প্রত্যুত্তরে মেজাজ খারাপ করে নারীজাতির অসহিষ্ণুতা নিয়ে একটি বর্ণবাদী মন্তব্য করতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিলো টুটুল। মনমরা হয়ে চটের ব্যাগে রাখা একটি পলিথিন মোড়ানো বস্তু বের করে সে। গজগজ করতে করতে তার অসন্তোষ প্রকাশ করে। -তোমরা আসলে পুরাটা না শুনেই খালি তেজ দেখাও। জরিমানার পুরাটা তো এখনও দেখোই নাই। এই দেখো কী আনছি। এই ঠোঙ্গার মধ্যে কী আছে বলো তো? অনুমান? হাহাহা! আমজাদের পেনিসটা কেটে নিয়ে আসলাম। প্রস্তুতি নিয়ে গেছিলাম। জিনিসপাতি সব সাথেই ছিলো। বেচারার আমও গেলো ছালাও গেলো। কঠিন দুঃখের ব্যাপার। সে কী, তুমি হাসতেছো কেন? ওহ, এইটার সাইজ দেইখা? হাহাহা! এই মুহূর্তে আমজাদ উপস্থিত থাকলে নিশ্চয়ই কসম কেটে বলতো এটা কেটে নেয়ার মুহূর্তে এত ছোট ছিলো না! এগিয়ে চলোর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রথম প্রকাশিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায়কে ‘জনগণের বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, সরকার বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করার যে দুরভিসন্ধি করেছিল, সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হলো। আজ সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ প্রতিক্রিয়া জানান। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। রিজভী বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। বর্তমান জাতীয় সংসদের যে কম্পোজিশন, তাতে উচ্চ আদালতের বিচারকগণের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকলে সেখানে চরম দলীয় কর্তৃত্বের প্রতিফলন ঘটত এবং নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হতো। বিচারকগণকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে তারা চাপ প্রয়োগের সুযোগ পেত। সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের আদালতের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের নিশ্চিত সম্ভাবনা দূরীভূত হলো। সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্তের ফলে জনগণের মনে ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তার আশ্বাস আরও গভীরভাবে প্রোথিত হলো।’৩ রোববার রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে সোমবার দুপুরে রাঙামাটিতে ফের পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের মানিকছড়ির দেপ্পোছড়ি অংশে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটায় প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা রাঙামাটিতে আবার পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৩ জুনের বিপর্যয়কর পাহাড়ধসের ঘটনার ২০ দিনের মাথায় আজ সোমবার আবার এই ঘটনা ঘটল। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের মানিকছড়ির দেপ্পোছড়ি এলাকায় একটি পাহাড়ের অংশবিশেষ ধসে পড়ে। এতে প্রায় এক ঘন্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছে বলে রাঙামাটি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। গত রোববার রাত থেকে রাঙামাটিতে একটানা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত চলেছে। আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত একবারের জন্যও বৃষ্টিপাত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানার পর জেলা প্রশাসন রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করে। এরপর প্রায় সারা রাতই বৃষ্টি হয়েছে যা একটানা এখনো অব্যাহত আছে। এই ধরণের বৃষ্টিতে সবার মধ্যেই নতুন করে পাহাড়ধসের আতংক সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন করে কিছু আতঙ্কিত মানুষ আসছে বলে জেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে। গতকাল সকালে শহরের প্রান্তবর্তী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে জানা গেছে, সেখানে নতুন করে দুটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যেই দেপ্পোছড়িতে ধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৩ জুন নজিরবিহীন পাহাড়ধসে একমাত্র রাঙামাটিতেই ১২০ জন মানুষ মারা যান। আহত হয়েছিলেন অন্তত ৮৮ জন, যাঁদের অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন আছেন।
 
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free